যেভাবে সি (C) প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর জন্ম হয়
সেই ১৯০০ শতকের দিকে চার্লস ব্যাবেজের হাত ধরে প্রথম কম্পিউটার এর সূচনা। এরপর থেকে প্রতিদিন একটু একটু করে উন্নত হয়ে আমরা পেয়েছি আজকের আধুনিক কম্পিউটার। এই কম্পিউটার আসলে একটা যন্ত্র বা জড় বস্তু যেটা ০ আর ১ ছাড়া কিছুই বুঝে না। অর্থাৎ কম্পিউটার শুধুমাত্র বিদ্যুৎ আছে অথবা নাই, এই দুইটা অবস্থা বুঝতে পারে। যে শুধুমাত্র দুইটা শব্দ বা অবস্থা বুঝতে পারে তার সাথে ইন্টারেক্ট করা বা তাকে দিয়ে কাজ করানো সত্যিই কঠিন।এই জন্য সবাই সেই ১৯০০ শতক থেকেই চেষ্টা করে যাচ্ছে এমন একটা ভাষা তৈরি করার যেটা ব্যবহার করে আমরা সহজেই কম্পিউটার এর সাথে ইন্টারেক্ট করতে পারি। এই চেষ্টারই ফলস্বরূপ আজকের এত কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ।
১৯৬৬ সালের দিকে ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্টিন রিচার্ড ডিজাইন করেন বিসিপিএল (BCPL) নামের প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। এরপর ১৯৬৯ সালে আমেরিকার বেল ল্যাবরেটরিতে কেন থমসন ও ডেনিশ রিচি মিলিত ভাবে ডিজাইন করেন বি (B) নামের আর একটি প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ। এরপর আসে সেই মাহেন্দ্রক্ষণ যখন সি নামের একটি কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর জন্ম হয়। ১৯৬৯ থেকে ১৯৬৩ সাল এর মাঝামাঝি। আবারও সেই বেল ল্যাবরেটরিতে ডেনিশ রিচি সি ল্যাঙ্গুয়েজ এর সূচনা করেন। তখন এটি মূলত ইউনিক্স কে টার্গেট করে ডিজাইন করা হয়েছিল এবং প্রায় ১৯৭৮ সাল পর্যন্ত এর ব্যবহার বেল ল্যাবরেটরি এর মধ্যেই সীমিত ছিল। ১৯৭৮ সালে কারনিহান (Kernighan) এবং রিচি (Ritchie) "The C Programming Language" নামে সি ল্যাঙ্গুয়েজ এর বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে একটা প্রকাশনা বের করেন, যা "K & R C" নামেও পরিচিত। এর পরেই মূলত বেল ল্যাবরেটরি এর বাহিরে সি এর ব্যবহার শুরু হয়।
কম্পিউটার প্রফেশনালরা সেই সময় সি ব্যাপক ভাবে ব্যবহার করে শুরু করে। নির্দিষ্ট ও আন্তর্জাতিক কোন স্ট্যান্ডার্ড না থাকার কারনে অনেকেই সি ল্যাঙ্গুয়েজ কে বিভিন্নভাবে ব্যবহার করতে থাকেন। অনেক টা আমাদের বাংলা ভাষা ব্যবহারের মত। বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন রকম। এজন্য ১৯৮০ সালের মাঝামাঝি আমেরিকান ন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড ইন্সটিটিউট (ANSI X3J11 committee) সি ল্যাঙ্গুয়েজ এর জন্য একটা স্ট্যান্ডার্ড ডেফিনিশন নির্ধারন করে দেয় যা ANSI C নামেই বেশি পরিচিত। এরপর ১৯৯৯ সালের দিকে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন অব স্ট্যান্ডারডাইজেশন সি এর নতুন ডেফিনিশন বা স্ট্যান্ডার্ড (ISO/IEC 9899:1999) তৈরি করে দেয় যা C99 নামে পরিচিত।এরপর প্রায় ১১ বছর পর সি এ জন্য ISO নতুন স্ট্যান্ডার্ডISO/IEC 9899:2011 ডিফাইন করে দেয় যা C11 নামেও পরিচিত।
আমরা চেষ্টা করব সি এর সর্বশেষ স্ট্যান্ডার্ড এর উপর বেস করে বইটা লেখা।
তথ্যসুত্রঃ http://cm.bell-labs.com/who/dmr/chist.html
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন