ডিজিটাল বাংলাদেশ নামে এখন যে বাংলাদেশ দেখছি আমি চাই না এমন বাংলাদেশ।
কয়েক দিন আগে সোলার চালিত একটি ট্যাক্সি
দেখলাম পথে। দেখে কি যে ভালোলাগল বুঝাতে পারব না। মনে হচ্ছে না এবার সত্যি
বাংলাদেশ ডিজিটাল হচ্ছে বা হবে।
কিন্তু পরক্ষনেই মনে হলো, আমাদের এই
ডিজিটাল বাংলাদেশেই শিক্ষার্থী শিক্ষকের হাতে ধর্শিত হয়। যার কোন বিচার
হয় না। পার পেয়ে যায় অপরাধী। যা দেখে অন্যরা বলে আমরা করলে দোষ কি? আমি ও
করি। পুলিশ বা আইন তো কিছুই করতে পারবে না। এভাবে ঘটে যায় আরো অনেক অঘটন।
ছাত্রীরা এখন স্কুল/কলেজে যেতে ভয় পায়।
যে ডিজিটাল বাংলাদশে সড়ক দুর্ঘটনায় ধংশ
হয় অমূল্য সব প্রতিভা। যেখানে নেই ভালো সড়ক ব্যবস্থা। যে বাংলাদেশে গরু
আর ছাগল চিনলেই নাকি ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়া যায়। আর এখানে গরু আর ছাগল
হচ্ছে আমরা রাস্থার নিরীহ মানুষ গুলো। যাদের কোন দাম নেই। যে বাংলাদেশে
ক্ষমতা দেখানো হয় ক্ষমতাকে অকাজে লাগানো হয়। যে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিয়ে
আমি নিরীহ মানুষ কি করব যার শুধু দুই বেলা খেয়ে কাটিয়ে দিতে পারলেই হয়।
ডিজিটাল হোক আর এনালগ হোক, যেকোন দেশের
উন্নতি নির্ভর করে যোগাযোগ ব্যবস্থার উপর। কিন্তু আমারদের দেশের যোগাযোগ
ব্যবস্থার যে করুন অবস্থা তা চিন্তা করলে কান্না আসে। বাংলাদেশ নদী মাতৃক
দেশ হওয়ার পরিবহন ব্যবস্থা অনেক অংশই জলজ যান গুলোর উপর নির্বর করে। আর
জলজ যান গুলো কয়েক দিন পর পরই দূর্গটনায় পড়ে নিহত হয় হাজার মানুষ। আকাশ
উড়ার সাধ্য আমাদের নেই, তার পর ও দেশ আমাদের বলে আমরা ভাবি আমাদের বিমান
ব্যবস্থা নিয়ে যার দায়িত্ত্ব আমাদের সরকার পালন করতে পারে না পারে শুধু
এয়ারপোর্টের নাম পরিবর্তন করতে। আমরা চাই নাম কুড়াতে, চাই না কাজ। চাই না
দেশের উন্নতি। চাই ক্ষমতা। সড়ক ব্যবস্থা করুন পরিনতি সম্পর্কে কি বলব।
ভুক্তভুগিরাই জানে।
যারা ঢাকায় লোকাল বাস গুলোতে চলাফেরা করে
তারাই যানে দোযগ কি। তাদের আর দোযগ দেখতে হবে না। একটা লোকাল বাসে
সায়দাবাদ থেকে উত্তরা বা গাজিপুরের বাসে উঠিয়ে দিলেই হবে।
প্রতিদিন খিলগাঁও থেকে বনানী যেতে হয়।
যেতে হয় বলাকা বা ৬ নং বাসে করে। তার উপর বনানি দিয়ে মাঝে মাঝেই আমাদের
নেতারা চলাচল করে আর তার ফলাফল হিসেবে দুই একঘন্টার জন্য বন্ধ করে দেয়
গাড়ি চলাচল। ওরা ঠিক মত চলে যায়, তৈরি করে দিয়ে যায় এক বিশাল যানজট। ঐ
দিনের জন্য আর বাড়ি ফিরার চিন্তা তখন বাদ দিয়ে দিতে হয়। মাঝে মাঝে অনেক
দূর হেটে অনেক পথ ঘুরে তখন বাড়ি ফিরি। তখন যদি ওদের কাউকে হাতের কাছে পাই
মন চায় কাঁচা খেয়ে পেলি। তাদের কাউকে যদি বলাকা বাসে কিছুক্ষনের জন্য
দাড় করিয়ে একটু ভ্রমন করাতে পারতাম মনটা শান্তিতে ভরে যেত।
এত কিছুর পর আরো অনেক কিছু আছে। আছে বাসের
সাথে বাসের প্রতিযোগিতা। কয়েক দিন আগে বাসে করে ফিরছিলাম। একটা মানুষকে
বাস চাপা দিয়েছে। বাস ড্রাভার যখন দেখল মানুষটি মারা যাবে তখনি পাশের
জানালা দিয়ে বের হয়ে দোড়ে চলে গেল। এখানেই শেষ শেষ কাহিনি আরো সুন্দর।
আমরা বাস থেকে নেমে গেছি। লোক জন বলল বাস ভেঙ্গে দিতে, যা বলার তাই হল।
সাথে সাথে বাসটির মধ্যে ইট মেরে সব ভেঙ্গে দিল। যারা ভাংচে তারা চলে গেছে
ঐখান থেকে। অন্য আরেকটা বাস না পেয়ে দাঁড়িয়ে দাড়িয়ে ঘটনা দেখছি।
কিছুক্ষন পর পুলিশ মহাদয়েরা আসল। তারা কিছুক্ষন এদিক ও দিক হেটে কিছু
মানুষকে গ্রেফতার করা শুরু করল। আমার বয়সী একটি ছেলেকে ধরল। ছেলে বলল আমি
কিছু করি নি। আমি কিছু করি নি।
আমার মাথায় ঢুকে না পুলিশেরা কেন ঐ ছেলেকে ধরল ও তো একসিডেন্ট ও করে নি বা বাস ও ভাঙ্গে নি।
ঘটনা টা বলার কারন হচ্ছে আমাদের পুলিশ।
পারসনার কাহিনীতো এখন সবাই যানেন তাই না?
যারা মানুষের সম্ভ্রম নিয়ে যারা ব্যবসা করে তাদের সবাইকে সাথে সাথে কেন
ব্রাশ ফায়ারে ফেলে মারা হয় না? কেন তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য হয়ে ও
তাদের কোন বিচার হয় না? এখন কি পারসনার মত আরো অনেক প্রতিষ্টান আশকারা
পেয়ে যাবে না? তারা কি আরো বিপুল আগ্রহে আমাদের মা, বোন, স্ত্রীদের সম্ভম
নিয়ে ব্যবসা করবে না? এটা কেমন বাংলাদেশ? এটা কেমন ডিজিটাল বাংলাদেশ?
আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিদেশে বিদেশে গিয়ে
বলে বাংলাদেশ থেকে লোক নিন। জনবল নিন। আরো বেশি করে নিন। কিন্তু কেন? কেন
আমরা আমাদের জনবলকে ব্যবহার করতে পারি না? কেন আমরা শিক্ষা জীবন শেষ করে
বেকার বসে থাকতে হয়? আমরা কম জানি বলে? তাহলে আমরা বিদেশে গিয়ে কিভাবে
কাজ করি? আমরা যদি নাই পারি আমরাতো বিদেশে গিয়েও কাজ করতে পারতাম না।
কিন্তু কেন আমাদের দেশেই আমাদের জন্য কাজের ব্যবস্থা করে দেওয়া হয় না?
কেন আমরা বিদেশে গিয়ে চাকর খাটব। নিজে নিজে কিছু কররব না
?
?
আমাদের দেশের উদ্যেক্তাদেরকে কেন আমরা
প্রয়োজনীয় সাহায্য করি না? কেউ একজন বিদেশ থেকে সফল হয়ে ফিরে না আশা
পর্যন্ত কেন তার কোন দাম নেই? এত সব কেন উত্তর দিবে কে? যদি না দিতে পারে
তাহলে কেন ক্ষমতা দখল করে আছে?
বর্তমান যোগাযোগের সবচেয়ে বড় মাধ্যম
হচ্ছে ইন্টারনেট। যেখানে বাংলাদেশে থেকে আমরা ঠিক মত ইন্টারনেট ব্যবহার
করতে পারি না। সেখানের ব্যন্ডউইথ বিদেশে রপ্তানি হয়। কি হাস্যকর সিদ্ধান্ত
আমাদের। কিন্তু আমাদের যেসব রপ্তানি করা প্রয়জন সে সব আমরা রপ্তানি করতে
পারি না। আমাদের রপ্তানি করতে দেয় না। সেখানে কিভাবে আমাদের প্রয়জনীয়
ব্যন্ডউইথ রপ্তানি হয়?
নাহ! আমরা বিদেশের উপর নির্ভর হয়ে থাকতে
চাই না। আমরা চাই না অন্য দেশের উপর নির্ভব ডিজিটাল বাংলাদেশ। একটি
বাংলাদেশ চাই যা হচ্ছে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ। আত্ননির্ভরশীল বাংলাদেশ। যেখানে
থাকবে না কোন বেকার। থাকবে না কোন খাদ্য সংকট, থাকবে না পরিবহন ব্যবস্থায়
কোন ত্রুটি। যাই সুষ্ঠু যোগাযোগ ব্যবস্থা। চাই নির্বিছিন্ন বিদ্যুৎ
ব্যবস্থা।
এসব কিছু পাওয়া কি খুব কঠিন?
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন