টাকা নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যথা কোনদিন ও
ছিল না। খেয়ে দেয়ে পড়ালেখা করতে পারলেই হয়। ইচ্ছে হচ্ছে ডক্টরেট করা।
তাই পড়ালেখার দিকেই নজর দিয়ে আসছি। মাঝে মাঝে ব্লগিং। নতুন কিছু জানার
জন্য নেট সার্ফিং নেশা হয়ে উঠলো। এ সাইট থেকে ঐ সাইট করতে করতেই সারাদিন
কাটিয়ে দি। আগে কম্পিউটার ছাড়া কিছু ভালো লাগত না। আর এখন সাথে
ইন্টারনেট। মাঝে মাঝে নেট কানেকশন দশ মিনিটের জন্য ডিসকানেক্টেড হলে মনে
হয় যেন আমি অনেক কিছু হারিয়ে ফেলছি। নেট প্রোভাইডারকে সাথে সাথেই ফোন। আর
আবার কানেকশন পেলেই স্বস্তি। বন্ধু বা আত্মীয় দের মাঝে একটু বিরক্তির
কারণ হয়ে আছি এজন্য। ঈদে সবাই বাড়ি যায়, আমি যাই না। কারন আমার
কম্পিউটার আর ইন্টারনেট।
টিউশনি করা মনে হয় আমার কপালে নেই।
বন্ধুরা আমার জন্য টিউশনি যোগাড় করলেও কয়েক দিন গিয়ে আমি আর পড়াতে যাই
না। আমার ভালো লাগে না। এটা বলার কারন হচ্ছে যে আমি টিউশনি কে অবহেলা করি
তা না। আমার টিউশনি করার মত ক্ষমতা বা টিউশনি করতে যে গুন গুলো ধকরার তা
নেই। তাই তো টিউশনি করা হয় না। আর এটাই হচ্ছে একটা সমস্যা। পড়ি প্রাইভেট
ইউনিভার্সিটিতে। খরচ তুলনা মূলক ভাবে অনেক বেশি। আর তাই ফ্যামিলি বা
বন্ধুদের থেকে একটা কথা শুনতে হয় যে টিউশনি করলে তো অন্তত তোর নিজের খরচ
হয়ে যায়। টিউশনি করস না কেন? টিউশিনি করে অনেকেই নিজের খরচ চালায়। আর
পরিচিত এমন দুই একজকে দেখিয়ে বকা ঝকার পরিমান বাড়িয়ে দেয়… বকা শুনে
চিন্তা করলাম সত্যি আমার এবার কিছু করা উচিত। অন্তত নিজের খরচ টা যোগাড়
করা উচিত।
আমি অনলাইনে আজ প্রায় দুই বছর। টাকা
রুজির চেষ্টা করা হয় নি জোর দিয়ে। ব্লগিং করতাম বাংলায়। ইংরেজী ব্লগিং
করলে ও হয়তো একটা গতি হত। কিন্তু দূর্ভাগ্যক্রমে হয় নি। টাকা রুজি করার
জন্য সিরিয়াস হয়ে গেলাম। আর তা অক্টেবর ২০১১, ওডেস্ক আর ফ্রীল্যান্সার এ
বিড করলাম। একাউন্ট আগেই খোলা ছিল। তাওহিদ ভাই এর সাহায্য কি কি করতে হবে
জেনে নিলাম। আর ফ্রীল্যান্সিং সাইট গুলো ছাড়াও পরিচিত যারা ওয়েব ডেভলপিং
এর কাজ করে তাদের কাজে জিজ্ঞেস করলাম আমার জন্য কোন কাজ আছে কিনা। নাহ!!
কেউ সাড়া দেয় নি। দুই এক জনের কাছে কাজ পাবো বলে আমার খুব বেশি বিশ্বাস
ছিল। তাদের নক করলাম। কিন্তু হতাস করল।।
ওডেস্কে দুই একটা ছোট কাজ পেয়ে গেলাম। ও
গুলো শেষ করে পেলাম কিছু টাকা। অনেক খুশি হলাম। ব্রাউজিং আর পড়ালেখার মাঝে
মাঝেই চলতে থাকল। পরীক্ষা শেষ। মোটামুটি অনেক গুলো সময় হাতে। আর ওডেস্কে
বিড করতে লাগলাম আরো মন দিয়ে। নিশাচর হওয়াতে এক সকালে বিড করে ফজরের
নামাজ পড়ে ঘুমুতে গেলাম। আর দুপুরে ঘুম থেকে উঠেই প্রতিদিনের মত অনলাইনে
আসলাম। দেখলাম ওডেস্কে নতুন দুটি মেসেজ দুটি বিড থেকে। আল্লাহর রহমতে দুটি
জব ই পেলাম। একটা আওয়ারলি আরেকটা ফিক্সড। আওয়ারলি জবটা অনেক বড় একটা
প্রজেক্টের। জয়েন করলাম। আর সত্যি আমার স্বপ্ন গুলো পূরণ করে দিল। আর
আমাকে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে সাহায্য করল… আমাকে আল্লাহ বেশি দিন কষ্ট দেয়
নি। মাত্র এক মাসের মধ্যেই সব কিছু পেতে সাহায্য করেছে। মাত্র এক মাস
ফ্রীল্যান্সিং সাইট গুলোতে ট্রাই করেই আমি এখন বলতে পারি যে কোন সরকারী
চাকুরে জীবি থেকে ভালো আছি… আল্লাহ যেন আমাকে এমন ভালো রাখেন… আর আমার ভাই,
বাবা, মা ও অনেক খুশি। ছেলে রুজি করে… হয়তো তাদের খুশি আমার থেকেও বেশি।
গল্পটা বোরিং হোক আর যাই হোক লেখার অনেক
গুলো কার।ণ রয়েছে। আমি চরম হতাশ ছিলাম। ওডেস্কে কাজ করে আমার হতাশটা কেটে
আমি এখন পুরো স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারছি মাত্র এক মাসে। হতাশতার সময়
আমার কাছের কয়েকটি মানুষ পাশে ছিল যারা আমার হতাশতা দেখছে। রুবেল, নাসির
ভাই, তাওহিদ ভাই, মনজু, লাকিএফএম, মেহেদী… হয়তো তারাও চিন্তা করেনি আমি এত
সুন্দর একটা জব পাবো। এমন কি আমিও। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করে শেষ
হবে না।
যারা এরকম কম্পিউটার নিয়ে পড়ে থাকে।
তাদের হয়তো বাসা থেকে আমার মতই বকা শুনতে হয়। আর ইন্টারনেট থেকে যদি কিছু
রুজি করে ফ্যামিলিকে দেখানো যায় তাহলে তারাও খুশি আমরা ও… কাজ করার জন্য
যে এমন কিছু শিখতে হবে তা না। যা জানা আছে তা নিয়েই আমার মনে হয় শুরু করা
যায়। কারন অনেক গুলো কাজ আছে অনলাইনে যা সবাই করতে পারে।। অনেকেই পিটিসি
সাইট গুলো নিয়ে পড়ে থাকে। তাদের আগেই ভালো লাগত না। এখন তো নাই…
আপনার জন্য আমার আরেকটি লেখা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন