ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান অনুষদের ‘ডিনস
অ্যাওয়ার্ড ২০১৩’ পেয়েছেন মোট ১৮ জন। তাঁদের মধ্যে গণিত বিভাগ থেকেই আছেন
পাঁচ মেধাবী মুখ।
ডিনস অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার নিয়মটা বেশ কঠিন। সম্মান পরীক্ষায় ন্যূনতম সিজিপিএ থাকতে হয় ৩.৭৫ এবং তা পেতে হবে কোনো মানোন্নয়ন পরীক্ষা ছাড়াই। কীভাবে গণিত বিভাগ থেকে তাঁরা অর্জন করলেন এ সম্মাননা? তাঁদের মুখ থেকেই শোনা যাক সে গল্প।
ফারহানা আহমেদ। ছোটবেলা থেকেই যাঁর ভালো লাগত অঙ্ক কষতে। গণিত বিভাগে সুযোগ পেয়ে তাই প্রথম থেকেই তাঁর ইচ্ছে ছিল ডিনস অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার। ‘তাই নোট করে পড়তাম, ক্লাসে ছিলাম নিয়মিত।’ বলছিলেন তিনি। শুধু এভাবেই কি সাফল্য ধরা দিয়েছে তাঁর হাতের মুঠোয়? ‘মোটেই না। এ সাফল্যের পেছনে বিরাট অবদান আমার মা-বাবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ার পর আমার যেন অসুবিধা না হয়, সে জন্য তাঁরা শ্রীমঙ্গল থেকে চলে আসেন ঢাকায়।’ পরিবারের কষ্ট বৃথা যায়নি। সিজিপিএ-৩.৮৯ পেয়ে বিভাগের প্রথম স্থান অর্জন করেছেন তিনি, চোখে ভাসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন।
সিজিপিএ-৩.৮২ প্রাপ্ত শিরিন প্রভাত বলছিলেন গণিতের প্রতি তাঁর ভালোবাসার কারণ, ‘যুক্তি দিয়ে বুঝলেই হয় অঙ্ক, মুখস্থের বালাই নেই। অন্য বিষয়ের চেয়ে গণিতের মজাটা এখানেই।’ ঢাকার কেরানীগঞ্জের মেয়ে শিরিন আরও জানালেন তাঁর এলাকায় মেয়েদের শিক্ষার দৌড় স্কুল বা বড়জোর কলেজ পর্যন্তই। অনেক সংগ্রাম করে এত দূর আসতে হয়েছে তাঁকে। সফল হওয়ার প্রবল ইচ্ছাই বয়ে এনেছে সাফল্য।
অন্য সবার চেয়ে সজল চক্রবর্তীর ইতিহাসটা একটু আলাদাই। ‘ছোটবেলা থেকে গণিতভীতি ছিল। একটা অঙ্কও নিজ থেকে করতে পারতাম না। লোভ ছিল সাহিত্যে। নবম শ্রেণিতে উচ্চতর গণিতটা তাই নিলাম না। ফলাফল, ভালো রেজাল্ট করেও কোনো ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারলাম না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় দেখি আমার নামটা এসে ঠেকেছে ওই গণিতেই। একে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলাম। মন দিয়ে পড়তে পড়তেই বুঝতে পারলাম, ছোবটবেলায় বুঝে অঙ্ক না করায় আমার আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি তৈরি হয়েছিল।’ পরের কাহিনিটা সাফল্যের, সিজিপিএ-৩.৮০ পেয়ে তাক লাগানো সজল ভবিষ্যতে হতে চান গবেষক।
গ্রামে শৈশব-কৈশোর কাটানো জাকির হোসেন স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে একদিন আবিষ্কার করলেন, সবাই ভার্সিটির স্বপ্নে বিভোর। ছোটবেলা থেকেই অঙ্কে তুখোড় জাকির সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি গণিতেই পড়বেন। একটা মজার রেকর্ড আছে জাকিরের নামের পাশে। সব বর্ষের ফলাফলেই কারও না কারও সঙ্গে যৌথভাবে ভাগাভাগি করতেন মেধাস্থান! এবারও তিনি সজলের সঙ্গে সিজিপিএ-৩.৮০ অর্জন করেছেন। ‘স্বপ্ন দেখতাম আমার কৃষক বাবার জন্য কিছু করে দেখানোর। এ সম্মাননা পেয়ে বাবা আজ অনেক খুশি।’ বলছিলেন তিনি।
আরাফাতুর রহমানের গল্পটাও বেশ মজার। ‘স্কুলের ফার্স্ট বয় ছিলাম, অথচ গণিতে উৎসাহ ছিল না। ভাবতাম, বিজ্ঞান মানেই ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়া, অন্য কোনো বিষয়ে পড়া মানেই বেকারের খাতায় নাম লেখানো। কিন্তু মেডিকেল কলেজে সুযোগ না পাওয়ার পর ঠাঁই মিলল এ বিভাগে। এত ভালো সুযোগ পেয়েও প্রথম দিকে অত সিরিয়াস ছিলাম না। ভালোবাসতাম সাহিত্য, উদাস হতাম পল্লিগীতির সুরে। দ্বিতীয় বর্ষে উঠে পড়াশোনাটা সত্যিসত্যি শুরু করি। তাঁর ঝুলিতেও আছে রেকর্ড—পরের বছরগুলোতে টানা ৩.৯০-এর ওপর পেয়ে দেখিয়ে দেন তিনি। সবমিলিয়ে তাঁর সিজিপিএ-৩.৭৯। ব্যক্তিস্বাধীনতা আছে, সে ধরনের কোনো প্রকল্পে কাজ করার ইচ্ছে তাঁর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানেক্স ভবনে অবস্থিত গণিত বিভাগটি বর্তমানে সেশনজট থেকে মুক্ত। গণিতের পাশাপাশি তাত্ত্বিক বিষয়ের ওপরও জোর দিতে হয় অনেক। শিখতে হয় প্রোগ্রামিং। শিক্ষকতা ও গবেষণার পাশাপাশি গণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের চাকরির চাহিদাও অনেক। রয়েছে প্রবাসে উচ্চশিক্ষার অপার সম্ভাবনা।
ডিনস অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার নিয়মটা বেশ কঠিন। সম্মান পরীক্ষায় ন্যূনতম সিজিপিএ থাকতে হয় ৩.৭৫ এবং তা পেতে হবে কোনো মানোন্নয়ন পরীক্ষা ছাড়াই। কীভাবে গণিত বিভাগ থেকে তাঁরা অর্জন করলেন এ সম্মাননা? তাঁদের মুখ থেকেই শোনা যাক সে গল্প।
ফারহানা আহমেদ। ছোটবেলা থেকেই যাঁর ভালো লাগত অঙ্ক কষতে। গণিত বিভাগে সুযোগ পেয়ে তাই প্রথম থেকেই তাঁর ইচ্ছে ছিল ডিনস অ্যাওয়ার্ড পাওয়ার। ‘তাই নোট করে পড়তাম, ক্লাসে ছিলাম নিয়মিত।’ বলছিলেন তিনি। শুধু এভাবেই কি সাফল্য ধরা দিয়েছে তাঁর হাতের মুঠোয়? ‘মোটেই না। এ সাফল্যের পেছনে বিরাট অবদান আমার মা-বাবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পাওয়ার পর আমার যেন অসুবিধা না হয়, সে জন্য তাঁরা শ্রীমঙ্গল থেকে চলে আসেন ঢাকায়।’ পরিবারের কষ্ট বৃথা যায়নি। সিজিপিএ-৩.৮৯ পেয়ে বিভাগের প্রথম স্থান অর্জন করেছেন তিনি, চোখে ভাসছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন।
সিজিপিএ-৩.৮২ প্রাপ্ত শিরিন প্রভাত বলছিলেন গণিতের প্রতি তাঁর ভালোবাসার কারণ, ‘যুক্তি দিয়ে বুঝলেই হয় অঙ্ক, মুখস্থের বালাই নেই। অন্য বিষয়ের চেয়ে গণিতের মজাটা এখানেই।’ ঢাকার কেরানীগঞ্জের মেয়ে শিরিন আরও জানালেন তাঁর এলাকায় মেয়েদের শিক্ষার দৌড় স্কুল বা বড়জোর কলেজ পর্যন্তই। অনেক সংগ্রাম করে এত দূর আসতে হয়েছে তাঁকে। সফল হওয়ার প্রবল ইচ্ছাই বয়ে এনেছে সাফল্য।
অন্য সবার চেয়ে সজল চক্রবর্তীর ইতিহাসটা একটু আলাদাই। ‘ছোটবেলা থেকে গণিতভীতি ছিল। একটা অঙ্কও নিজ থেকে করতে পারতাম না। লোভ ছিল সাহিত্যে। নবম শ্রেণিতে উচ্চতর গণিতটা তাই নিলাম না। ফলাফল, ভালো রেজাল্ট করেও কোনো ভালো কলেজে ভর্তি হতে পারলাম না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় দেখি আমার নামটা এসে ঠেকেছে ওই গণিতেই। একে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিলাম। মন দিয়ে পড়তে পড়তেই বুঝতে পারলাম, ছোবটবেলায় বুঝে অঙ্ক না করায় আমার আত্মবিশ্বাসে ঘাটতি তৈরি হয়েছিল।’ পরের কাহিনিটা সাফল্যের, সিজিপিএ-৩.৮০ পেয়ে তাক লাগানো সজল ভবিষ্যতে হতে চান গবেষক।
গ্রামে শৈশব-কৈশোর কাটানো জাকির হোসেন স্কুল-কলেজের গণ্ডি পেরিয়ে একদিন আবিষ্কার করলেন, সবাই ভার্সিটির স্বপ্নে বিভোর। ছোটবেলা থেকেই অঙ্কে তুখোড় জাকির সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি গণিতেই পড়বেন। একটা মজার রেকর্ড আছে জাকিরের নামের পাশে। সব বর্ষের ফলাফলেই কারও না কারও সঙ্গে যৌথভাবে ভাগাভাগি করতেন মেধাস্থান! এবারও তিনি সজলের সঙ্গে সিজিপিএ-৩.৮০ অর্জন করেছেন। ‘স্বপ্ন দেখতাম আমার কৃষক বাবার জন্য কিছু করে দেখানোর। এ সম্মাননা পেয়ে বাবা আজ অনেক খুশি।’ বলছিলেন তিনি।
আরাফাতুর রহমানের গল্পটাও বেশ মজার। ‘স্কুলের ফার্স্ট বয় ছিলাম, অথচ গণিতে উৎসাহ ছিল না। ভাবতাম, বিজ্ঞান মানেই ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হওয়া, অন্য কোনো বিষয়ে পড়া মানেই বেকারের খাতায় নাম লেখানো। কিন্তু মেডিকেল কলেজে সুযোগ না পাওয়ার পর ঠাঁই মিলল এ বিভাগে। এত ভালো সুযোগ পেয়েও প্রথম দিকে অত সিরিয়াস ছিলাম না। ভালোবাসতাম সাহিত্য, উদাস হতাম পল্লিগীতির সুরে। দ্বিতীয় বর্ষে উঠে পড়াশোনাটা সত্যিসত্যি শুরু করি। তাঁর ঝুলিতেও আছে রেকর্ড—পরের বছরগুলোতে টানা ৩.৯০-এর ওপর পেয়ে দেখিয়ে দেন তিনি। সবমিলিয়ে তাঁর সিজিপিএ-৩.৭৯। ব্যক্তিস্বাধীনতা আছে, সে ধরনের কোনো প্রকল্পে কাজ করার ইচ্ছে তাঁর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানেক্স ভবনে অবস্থিত গণিত বিভাগটি বর্তমানে সেশনজট থেকে মুক্ত। গণিতের পাশাপাশি তাত্ত্বিক বিষয়ের ওপরও জোর দিতে হয় অনেক। শিখতে হয় প্রোগ্রামিং। শিক্ষকতা ও গবেষণার পাশাপাশি গণিতে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের চাকরির চাহিদাও অনেক। রয়েছে প্রবাসে উচ্চশিক্ষার অপার সম্ভাবনা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন