হতাশ
না হয়ে লেগে থাকলে যে সফল হওয়া যায়, তার প্রমাণ কেন্টাকি ফ্রায়েড চিকেন বা
কেএফসির প্রতিষ্ঠাতা কর্নেল হারল্যান্ড ডেভিড স্যান্ডার্স। পৃথিবীখ্যাত
একজন ব্যবসায়ী হওয়ার আগে স্যান্ডার্স কে ছিলেন? তিনি ছিলেন স্কুল থেকে ঝরে
পড়া এক ছাত্র, একজন খেতমজুর, ট্রেনের ফায়ারম্যান, আইনজীবী, বিমা কোম্পানির
সেলসম্যান, ডিঙি নৌকার উদ্যোক্তা, গাড়ির টায়ারবিক্রেতা, শখের
ধাত্রীবিশারদ, একজন অসফল রাজনীতিক, ফিলিং স্টেশনের কর্মচারী এবং সর্বশেষ
একজন রেস্তোরাঁ ব্যবসায়ী।
কর্নেল স্যান্ডার্সের জন্ম ১৮৯০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। যে বাড়িতে জন্মেছিলেন, সেখানে ঘর ছিল চারটি। আর বাড়িটা ছিল ইন্ডিয়ানার হেনরিভ্যালি থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে। উইলবার ডেভিড ও মার্গারেট অ্যানের তিন সন্তানের মধ্যে স্যান্ডার্স সবার বড়।
স্যান্ডার্সের বাবা ছিলেন অত্যন্ত স্নেহশীল এক মানুষ। এক দুর্ঘটনায় তাঁর বাবার পা ভেঙে যায়। পা ভাঙার আগ পর্যন্ত তিনি ৮০ একরের বিশাল এক খামারে কাজ করতেন। এরপর দুই বছর তিনি মাংসের দোকানে কাজ করেছেন। ১৮৯৫ সালের এক গ্রীষ্মের বিকেলে তিনি প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে বাড়ি ফেরেন এবং পরদিন মারা যান।
বাবা মারা যাওয়ার বেশ কয় বছর পর ১৯০২ সালে স্যান্ডার্সের মা আবার বিয়ে করেন এবং পরিবারসহ ইন্ডিয়ানা রাজ্যের গ্রিনউডে চলে যান। সৎবাবার সঙ্গে স্যান্ডার্সের ছিল দা-কুমড়া সম্পর্ক। ১৯০৩ সালে স্যান্ডার্স স্কুল ছেড়ে দিয়ে পাশের এক খামারে কাজ নেন। এরপর তিনি ইন্ডিয়ানা পুলিশ বাহিনীর ঘোড়ার গাড়িতে রং করার চাকরি নেন। যখন তাঁর বয়স ১৪ বছর, তখন তিনি দক্ষিণ ইন্ডিয়ানার স্যাম উইলসনের খামারে যান এবং সেখানে খেতমজুর হিসেবে দুই বছর কাজ করেন। এরপর ১৯০৬ সালে মায়ের অনুমতি নিয়ে স্যান্ডার্স চলে যান তাঁর এক চাচার সঙ্গে দেখা করতে। চাচা থাকতেন ইন্ডিয়ানার অন্তর্গত নিউ আলবানিতে আর কাজ করতেন গাড়ি প্রস্তুতকারক এক কোম্পানিতে। এই চাচা স্যান্ডার্সকে তখন ওই প্রতিষ্ঠানে কন্ডাক্টরের চাকরি জুটিয়ে দেন।
এর বছর খানেক বাদে স্যান্ডার্স আবার চলে যান অ্যালবামার আরেক অঞ্চল সেফিল্ডে। সেখানেও তাঁর এক চাচা বাস করতেন। চাচার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ঘটে আরেক কাণ্ড। স্যান্ডার্সের আরেক ভাই সেখানে আগে থেকেই হাজির! ব্যাপার আর কিছুই নয়, সৎবাবার হাত থেকে পরিত্রাণ পেতেই ভাইটি চলে এসেছে এই চাচার ডেরায়।
যাহোক, চাচা কাজ করতেন দক্ষিণ রেলরোডে। তিনি সেখানকার এক কামারশালায় স্যান্ডার্সকে ঢুকিয়ে দেন। স্যান্ডার্স কামারের সাহায্যকারী হিসেবে কাজ শুরু করে দেন। কিন্তু দুই মাস যেতে না যেতেই স্যান্ডার্সের মন উড়ু উড়ু করতে শুরু করে। তিনি আবার পাড়ি জমান অ্যালবামার আরেক এলাকা জাসপারে। সেখানে কয়লাচালিত ট্রেনের ছাইয়ের ট্যাংক পরিষ্কার করার কাজে যোগ দেন তিনি। পরে কাজ পান ফায়ারম্যানের। তখন স্যান্ডার্সের বয়স মাত্র ১৬। তারপর কেটে যায় আরও দুই বছর। এর মধ্যে স্যান্ডার্স নর্থফোক ও ওয়েস্টার্ন রেলস্টেশনে দিনমজুরির কাজ জুটিয়ে নেন।
কিন্তু স্বভাবজাত উড়ু উড়ু মনের কারণে স্যান্ডার্স এখানেও বেশি দিন টিকতে পারেন না। তিনি আবার পাড়ি দেন ইলিনয় সেন্ট্রাল রেলরোডে। সেখানে আবার ফায়ারম্যানের চাকরি নেন। একই সময় স্যান্ডার্স আরও একটি কাজ শুরু করেন। এরপর তিনি এক্সটেনশন ইউনিভার্সিটিতে আইন বিষয়ে পড়তে শুরু করেন।
কিন্তু উত্থান-পতন যাঁর বিধানলিপি, তাঁর জীবন নিস্তরঙ্গভাবে চলবে, তা হয় কী করে? তুচ্ছ এক বিষয় নিয়ে সহকর্মীর সঙ্গে ঝগড়া বাঁধিয়ে চাকরি হারান স্যান্ডার্স। তবে আইন পড়াটা চালিয়ে যান। আইনের কোর্স শেষ হলে স্যান্ডার্স লিটল রক নামের এক আইন প্রতিষ্ঠানে তিন বছর প্র্যাকটিস করেন। এ সময় তিনি বেশ টাকাপয়সা উপার্জন করেন।
তাতে অবশ্য খুব একটা রকমফের হয় না! অর্থকড়ির শিকলে আটকা পড়ে না স্যান্ডার্সের উড়ু উড়ু মন। তিনি আইন পেশাকে বিদায় জানিয়ে ফিরে আসেন মায়ের কাছে। ১৯১৬ সালের দিকে আবার চলে যান জেফারসন ভ্যালিতে। সেখানে এক জীবনবিমা কোম্পানিতে চাকরি নেন। কিছুদিন পর ‘অবাধ্যতার’ অভিযোগে সেই চাকরিও হারান। তাতে অবশ্য কোনো সমস্যাতেই পড়তে হয় না স্যান্ডার্সকে। নিউজার্সিতে গিয়ে দিব্যি সেলসম্যানের চাকরি জুটিয়ে নেন।
১৯২০ সালের দিকে স্যান্ডার্স একটি ডিঙি নৌকার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এই কোম্পানি থেকে তিনি ওহিও নদীতে চলমান ডিঙি নৌকা সরবরাহ করতেন। এর পাশাপাশি ১৯২২ সালে তিনি ইন্ডিয়ানার চেম্বারস অব কমার্সে চাকরি নেন। কিন্তু এক বছরের মাথায় চাকরিটা ছেড়ে দেন। ডিঙি নৌকার কোম্পানিটিও বিক্রি করে দেন ২২ হাজার ডলারে।
স্যান্ডার্স এবার পাড়ি জমান কেন্টাকি রাজ্যের উইনচেস্টারে। সেখানে এক টায়ার কোম্পানিতে সেলসম্যানের চাকরি নেন। কিন্তু ১৯২৪ সালে কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় স্যান্ডার্সের সঙ্গে পরিচয় ঘটে কেন্টাকির স্ট্যান্ডার্ড অয়েল কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজারের সঙ্গে। ম্যানেজার ভদ্রলোক তাঁকে নিকোলাসভ্যালির এক সার্ভিস স্টেশনে চাকরি দেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য! ১৯৩০ সালে স্টেশনটি বন্ধ হয়ে যায়।
অথই সাগরে পড়েন স্যান্ডার্স। এ সময় তিনি ভোক্তাদের খাবার সরবরাহের কাজ শুরু করেন। তখন পর্যন্ত তাঁর কোনো রেস্তোরাঁ ছিল না। তিনি নিজ বাড়িতেই এ কাজ শুরু করেন। দ্রুত তাঁর খাবারের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।
১৯৩৯ সালে নর্থ ক্যারোলাইনার অ্যাশেভ্যালিতে তিনি একটি মোটেল নেন। ওই বছরের নভেম্বরে মোটেলটি এক অগ্নিকাণ্ডে পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে যায়। এবার স্যান্ডার্স মোটেলটিকে ১৪০ আসনের এক রেস্টুরেন্টে পরিণত করেন।
১৯৫২ সালে স্যান্ডার্স সিদ্ধান্ত নেন ‘চিকেন ফ্রাই’ ধারণাটাকে তিনি তাঁর আয়ের উৎসে পরিণত করবেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি উপযুক্ত রেস্তোরাঁ খোঁজা শুরু করেন। শেষমেশ স্যান্ডার্স ও তাঁর স্ত্রী মিলে সেলবাইভ্যালিতে একটি রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। তাঁদের রেস্তোরাঁ ব্যবসাটা ব্যাপকভাবে সফল হয়। কে না জানে কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেন-কেএফসি এখন বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বড় ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁ।
১৯৫৫ সালে স্যান্ডার্স কেএফসির ব্যাবসা সম্প্রসারণ শুরু করেন এবং ১০ বছরের মধ্যে কানাডা, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কেএফসির ৬০০টি শাখা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি এ রেস্তোরাঁকে দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে এক আমেরিকান কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেন।
১৯৮০ সালের ১৬ ডিসেম্বর ৯০ বছর বয়সে এই বিশ্বখ্যাত ব্যবসায়ী মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: কর্নেল স্যান্ডার্সের ওয়েবসাইট ও উইকিপিডিয়া। ইংরেজি থেকে অনুবাদ: মারুফ ইসলাম
কর্নেল স্যান্ডার্সের জন্ম ১৮৯০ সালের ৯ সেপ্টেম্বর। যে বাড়িতে জন্মেছিলেন, সেখানে ঘর ছিল চারটি। আর বাড়িটা ছিল ইন্ডিয়ানার হেনরিভ্যালি থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে। উইলবার ডেভিড ও মার্গারেট অ্যানের তিন সন্তানের মধ্যে স্যান্ডার্স সবার বড়।
স্যান্ডার্সের বাবা ছিলেন অত্যন্ত স্নেহশীল এক মানুষ। এক দুর্ঘটনায় তাঁর বাবার পা ভেঙে যায়। পা ভাঙার আগ পর্যন্ত তিনি ৮০ একরের বিশাল এক খামারে কাজ করতেন। এরপর দুই বছর তিনি মাংসের দোকানে কাজ করেছেন। ১৮৯৫ সালের এক গ্রীষ্মের বিকেলে তিনি প্রচণ্ড জ্বর নিয়ে বাড়ি ফেরেন এবং পরদিন মারা যান।
বাবা মারা যাওয়ার বেশ কয় বছর পর ১৯০২ সালে স্যান্ডার্সের মা আবার বিয়ে করেন এবং পরিবারসহ ইন্ডিয়ানা রাজ্যের গ্রিনউডে চলে যান। সৎবাবার সঙ্গে স্যান্ডার্সের ছিল দা-কুমড়া সম্পর্ক। ১৯০৩ সালে স্যান্ডার্স স্কুল ছেড়ে দিয়ে পাশের এক খামারে কাজ নেন। এরপর তিনি ইন্ডিয়ানা পুলিশ বাহিনীর ঘোড়ার গাড়িতে রং করার চাকরি নেন। যখন তাঁর বয়স ১৪ বছর, তখন তিনি দক্ষিণ ইন্ডিয়ানার স্যাম উইলসনের খামারে যান এবং সেখানে খেতমজুর হিসেবে দুই বছর কাজ করেন। এরপর ১৯০৬ সালে মায়ের অনুমতি নিয়ে স্যান্ডার্স চলে যান তাঁর এক চাচার সঙ্গে দেখা করতে। চাচা থাকতেন ইন্ডিয়ানার অন্তর্গত নিউ আলবানিতে আর কাজ করতেন গাড়ি প্রস্তুতকারক এক কোম্পানিতে। এই চাচা স্যান্ডার্সকে তখন ওই প্রতিষ্ঠানে কন্ডাক্টরের চাকরি জুটিয়ে দেন।
এর বছর খানেক বাদে স্যান্ডার্স আবার চলে যান অ্যালবামার আরেক অঞ্চল সেফিল্ডে। সেখানেও তাঁর এক চাচা বাস করতেন। চাচার সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে ঘটে আরেক কাণ্ড। স্যান্ডার্সের আরেক ভাই সেখানে আগে থেকেই হাজির! ব্যাপার আর কিছুই নয়, সৎবাবার হাত থেকে পরিত্রাণ পেতেই ভাইটি চলে এসেছে এই চাচার ডেরায়।
যাহোক, চাচা কাজ করতেন দক্ষিণ রেলরোডে। তিনি সেখানকার এক কামারশালায় স্যান্ডার্সকে ঢুকিয়ে দেন। স্যান্ডার্স কামারের সাহায্যকারী হিসেবে কাজ শুরু করে দেন। কিন্তু দুই মাস যেতে না যেতেই স্যান্ডার্সের মন উড়ু উড়ু করতে শুরু করে। তিনি আবার পাড়ি জমান অ্যালবামার আরেক এলাকা জাসপারে। সেখানে কয়লাচালিত ট্রেনের ছাইয়ের ট্যাংক পরিষ্কার করার কাজে যোগ দেন তিনি। পরে কাজ পান ফায়ারম্যানের। তখন স্যান্ডার্সের বয়স মাত্র ১৬। তারপর কেটে যায় আরও দুই বছর। এর মধ্যে স্যান্ডার্স নর্থফোক ও ওয়েস্টার্ন রেলস্টেশনে দিনমজুরির কাজ জুটিয়ে নেন।
কিন্তু স্বভাবজাত উড়ু উড়ু মনের কারণে স্যান্ডার্স এখানেও বেশি দিন টিকতে পারেন না। তিনি আবার পাড়ি দেন ইলিনয় সেন্ট্রাল রেলরোডে। সেখানে আবার ফায়ারম্যানের চাকরি নেন। একই সময় স্যান্ডার্স আরও একটি কাজ শুরু করেন। এরপর তিনি এক্সটেনশন ইউনিভার্সিটিতে আইন বিষয়ে পড়তে শুরু করেন।
কিন্তু উত্থান-পতন যাঁর বিধানলিপি, তাঁর জীবন নিস্তরঙ্গভাবে চলবে, তা হয় কী করে? তুচ্ছ এক বিষয় নিয়ে সহকর্মীর সঙ্গে ঝগড়া বাঁধিয়ে চাকরি হারান স্যান্ডার্স। তবে আইন পড়াটা চালিয়ে যান। আইনের কোর্স শেষ হলে স্যান্ডার্স লিটল রক নামের এক আইন প্রতিষ্ঠানে তিন বছর প্র্যাকটিস করেন। এ সময় তিনি বেশ টাকাপয়সা উপার্জন করেন।
তাতে অবশ্য খুব একটা রকমফের হয় না! অর্থকড়ির শিকলে আটকা পড়ে না স্যান্ডার্সের উড়ু উড়ু মন। তিনি আইন পেশাকে বিদায় জানিয়ে ফিরে আসেন মায়ের কাছে। ১৯১৬ সালের দিকে আবার চলে যান জেফারসন ভ্যালিতে। সেখানে এক জীবনবিমা কোম্পানিতে চাকরি নেন। কিছুদিন পর ‘অবাধ্যতার’ অভিযোগে সেই চাকরিও হারান। তাতে অবশ্য কোনো সমস্যাতেই পড়তে হয় না স্যান্ডার্সকে। নিউজার্সিতে গিয়ে দিব্যি সেলসম্যানের চাকরি জুটিয়ে নেন।
১৯২০ সালের দিকে স্যান্ডার্স একটি ডিঙি নৌকার কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করেন। এই কোম্পানি থেকে তিনি ওহিও নদীতে চলমান ডিঙি নৌকা সরবরাহ করতেন। এর পাশাপাশি ১৯২২ সালে তিনি ইন্ডিয়ানার চেম্বারস অব কমার্সে চাকরি নেন। কিন্তু এক বছরের মাথায় চাকরিটা ছেড়ে দেন। ডিঙি নৌকার কোম্পানিটিও বিক্রি করে দেন ২২ হাজার ডলারে।
স্যান্ডার্স এবার পাড়ি জমান কেন্টাকি রাজ্যের উইনচেস্টারে। সেখানে এক টায়ার কোম্পানিতে সেলসম্যানের চাকরি নেন। কিন্তু ১৯২৪ সালে কোম্পানিটি বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় স্যান্ডার্সের সঙ্গে পরিচয় ঘটে কেন্টাকির স্ট্যান্ডার্ড অয়েল কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজারের সঙ্গে। ম্যানেজার ভদ্রলোক তাঁকে নিকোলাসভ্যালির এক সার্ভিস স্টেশনে চাকরি দেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য! ১৯৩০ সালে স্টেশনটি বন্ধ হয়ে যায়।
অথই সাগরে পড়েন স্যান্ডার্স। এ সময় তিনি ভোক্তাদের খাবার সরবরাহের কাজ শুরু করেন। তখন পর্যন্ত তাঁর কোনো রেস্তোরাঁ ছিল না। তিনি নিজ বাড়িতেই এ কাজ শুরু করেন। দ্রুত তাঁর খাবারের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।
১৯৩৯ সালে নর্থ ক্যারোলাইনার অ্যাশেভ্যালিতে তিনি একটি মোটেল নেন। ওই বছরের নভেম্বরে মোটেলটি এক অগ্নিকাণ্ডে পুরোপুরি ভস্মীভূত হয়ে যায়। এবার স্যান্ডার্স মোটেলটিকে ১৪০ আসনের এক রেস্টুরেন্টে পরিণত করেন।
১৯৫২ সালে স্যান্ডার্স সিদ্ধান্ত নেন ‘চিকেন ফ্রাই’ ধারণাটাকে তিনি তাঁর আয়ের উৎসে পরিণত করবেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি উপযুক্ত রেস্তোরাঁ খোঁজা শুরু করেন। শেষমেশ স্যান্ডার্স ও তাঁর স্ত্রী মিলে সেলবাইভ্যালিতে একটি রেস্তোরাঁ খুলে বসেন। তাঁদের রেস্তোরাঁ ব্যবসাটা ব্যাপকভাবে সফল হয়। কে না জানে কেন্টাকি ফ্রাইড চিকেন-কেএফসি এখন বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বড় ফাস্ট ফুড রেস্তোরাঁ।
১৯৫৫ সালে স্যান্ডার্স কেএফসির ব্যাবসা সম্প্রসারণ শুরু করেন এবং ১০ বছরের মধ্যে কানাডা, চীনসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কেএফসির ৬০০টি শাখা প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৬৪ সালে তিনি এ রেস্তোরাঁকে দুই মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিময়ে এক আমেরিকান কোম্পানির কাছে বিক্রি করে দেন।
১৯৮০ সালের ১৬ ডিসেম্বর ৯০ বছর বয়সে এই বিশ্বখ্যাত ব্যবসায়ী মৃত্যুবরণ করেন।
সূত্র: কর্নেল স্যান্ডার্সের ওয়েবসাইট ও উইকিপিডিয়া। ইংরেজি থেকে অনুবাদ: মারুফ ইসলাম
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন