কিশোর বয়স থেকেই ক্রিকেটারদের খেলাধুলায়
ব্যস্ত থাকতে হয়। তাই তাঁদের পক্ষে পড়াশোনার সময় বের করা কঠিন হয়ে
পড়ে। কিন্তু ক্রিকেট দুনিয়ায় আলোচিত এমন অনেক ক্রিকেটারই আছেন, যাঁরা
খেলার মাঠে যেমন দুর্দান্ত, তেমনি পড়াশোনায়ও তুখোড়। এবারের বিশ্বকাপের
আলোচিত কয়েকজন ক্রিকেটারের কথা জানা যাক।
আমাদের মুশফিক
‘খেলায় সেরা, পড়ায় সেরা’—এ কথার বড় বিজ্ঞাপন তো আমাদের মুশফিকুর রহিম নিজেই। মুশফিক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর দুটোতেই পেয়েছেন প্রথম শ্রেণি। এর আগে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন জিপিএ-৫ নিয়ে। আর ক্রিকেটার হিসেবে দাপটের সঙ্গে খেলে চলেছেন জাতীয় দলে। তরুণদের কাছে তাই ইতিমধ্যেই অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন তিনি।
প্রথমবার বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সুখ আর বিপরীতে একরাশ ক্লান্তি নিয়ে সবে দেশে ফিরেছেন মুশফিক ও দলের অন্য সদস্যরা। ঢাকা হয়ে গ্রামের বাড়ি বগুড়ায় এলে ২৮ মার্চ সকালে কথা হয় বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান মুশফিকের সঙ্গে।
লেখাপড়া আর খেলাধুলা—কীভাবে এ কূল আর ও কূল দুই কূল রক্ষা করেন? জবাবে মুশফিক বলেন, ‘পড়ার সময় পড়াশোনা আর খেলার সময় খেলাধুলা, আমি সব সময় এই ব্রত মেনে চলেছি। তবে খেলার চাপ থাকলে আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমণ্ডলী ও সহপাঠীরা আমাকে সহযোগিতা করেছেন। তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’
মুশফিকের বাবা মাহবুব হামিদের কাছে জানা গেল, শৈশব থেকেই মুশফিকের কাঁধে দুটো ব্যাগ থাকত। একটিতে ক্রিকেটের ব্যাট-বল, অন্যটিতে পাঠ্যবই-খাতা-নোট। খেলার মাঠে একটি ব্যাগ খুলে ব্যাট হাতে নিত, বাসায় ফিরে অন্যটি খুলে বই-খাতা খুলে টেবিলে বসত।
মুশফিক বগুড়া জিলা স্কুলে পড়েছেন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত। তারপর বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) আর সবশেষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে।
বিকেএসপির অন্যতম ক্রিকেট কোচ মাসুদ হাসান বলেন, ‘ক্লাসে উপস্থিতি, পড়ালেখা, খেলার মাঠ—সবখানেই মুশফিক ছিল খুবই গোছালো। নিয়মানুবর্তিতাই মুশফিককে আজ এই জায়গায় নিয়ে এসেছে।’
কীভাবে লেখাপড়া আর খেলাধুলা দুটোই একসঙ্গে চালাতে হয় তা-ই নতুনেরা শিখতে চায় তাঁর কাছ থেকে। কী পরামর্শ তাঁদের জন্য? এক কথায় মুশফিকের জবাব, ‘সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগাও। আর পরিশ্রম করে যাও। সাফল্যের সহজ কোনো পথ নেই।’
এবি ডি ভিলিয়ার্স
প্রিটোরিয়ার এক সরকারি স্কুলে পড়াশোনা করেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। শুধু খেলাধুলা না, পড়াশোনায়ও ভালো ছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। তিনি বিজ্ঞান প্রজেক্টের জন্য জাতীয় পদক পেয়েছিলেন। এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে সাত ম্যাচে ৪৮২ রান করেন তিনি। এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৬ বলে অর্ধশত, ৩১ বলে শতক, ৬৪ বলে দেড় শ রানের মালিক তিনি। তিনি ১৮৭ এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ২০ শতকসহ ৭ হাজার ৯৪১ রান করেছেন।
কুমার সাঙ্গাকারা
কুমার সাঙ্গাকারা ক্রিকেট ব্যাটে যেমন, পড়াশোনায়ও তেমন সেরা। তিনি পড়াশোনা করেছেন শ্রীলঙ্কার ট্রিনিটি কলেজে। এই কলেজ থেকে সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘রাইড’ স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন তিনি। সাঙ্গাকারার বাবা ছিলেন আইনজীবী। বাবার পথেই যেতে চেয়েছিলেন তিনি। কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে ভর্তি হলেও শেষ পর্যন্ত পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে সাত ম্যাচে ৫৪১ রান করেন তিনি। পর পর চার ম্যাচে সেঞ্চুরি করার অসাধারণ রেকর্ড করেন সাঙ্গাকারা।
মার্টিন গাপটিল২০১৫ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আলোচিত ব্যাটসম্যান নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল। ফাইনালের আগে আট ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ ৫৩২ রান। নিউজিল্যান্ডের অ্যাভোনডেল কলেজে পড়াশোনা করেন তিনি। মাত্র ১৩ বছর বয়সে এক দুর্ঘটনায় পায়ের তিন আঙুল হারাতে হয় তাঁর। স্কুলের ক্রিকেট দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন তিনি। গাপটিল শেষবর্ষে ক্লাসের ‘প্রিফেক্ট’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।গ্রন্থনা: জাহিদ হোসাইন খান
আমাদের মুশফিক
‘খেলায় সেরা, পড়ায় সেরা’—এ কথার বড় বিজ্ঞাপন তো আমাদের মুশফিকুর রহিম নিজেই। মুশফিক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগ থেকে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর দুটোতেই পেয়েছেন প্রথম শ্রেণি। এর আগে বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন জিপিএ-৫ নিয়ে। আর ক্রিকেটার হিসেবে দাপটের সঙ্গে খেলে চলেছেন জাতীয় দলে। তরুণদের কাছে তাই ইতিমধ্যেই অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব হয়ে উঠেছেন তিনি।
প্রথমবার বিশ্বকাপ কোয়ার্টার ফাইনালে খেলার সুখ আর বিপরীতে একরাশ ক্লান্তি নিয়ে সবে দেশে ফিরেছেন মুশফিক ও দলের অন্য সদস্যরা। ঢাকা হয়ে গ্রামের বাড়ি বগুড়ায় এলে ২৮ মার্চ সকালে কথা হয় বিশ্বকাপে বাংলাদেশের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান মুশফিকের সঙ্গে।
লেখাপড়া আর খেলাধুলা—কীভাবে এ কূল আর ও কূল দুই কূল রক্ষা করেন? জবাবে মুশফিক বলেন, ‘পড়ার সময় পড়াশোনা আর খেলার সময় খেলাধুলা, আমি সব সময় এই ব্রত মেনে চলেছি। তবে খেলার চাপ থাকলে আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষকমণ্ডলী ও সহপাঠীরা আমাকে সহযোগিতা করেছেন। তাঁদের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।’
মুশফিকের বাবা মাহবুব হামিদের কাছে জানা গেল, শৈশব থেকেই মুশফিকের কাঁধে দুটো ব্যাগ থাকত। একটিতে ক্রিকেটের ব্যাট-বল, অন্যটিতে পাঠ্যবই-খাতা-নোট। খেলার মাঠে একটি ব্যাগ খুলে ব্যাট হাতে নিত, বাসায় ফিরে অন্যটি খুলে বই-খাতা খুলে টেবিলে বসত।
মুশফিক বগুড়া জিলা স্কুলে পড়েছেন সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত। তারপর বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) আর সবশেষে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগে।
বিকেএসপির অন্যতম ক্রিকেট কোচ মাসুদ হাসান বলেন, ‘ক্লাসে উপস্থিতি, পড়ালেখা, খেলার মাঠ—সবখানেই মুশফিক ছিল খুবই গোছালো। নিয়মানুবর্তিতাই মুশফিককে আজ এই জায়গায় নিয়ে এসেছে।’
কীভাবে লেখাপড়া আর খেলাধুলা দুটোই একসঙ্গে চালাতে হয় তা-ই নতুনেরা শিখতে চায় তাঁর কাছ থেকে। কী পরামর্শ তাঁদের জন্য? এক কথায় মুশফিকের জবাব, ‘সময়কে সঠিকভাবে কাজে লাগাও। আর পরিশ্রম করে যাও। সাফল্যের সহজ কোনো পথ নেই।’
এবি ডি ভিলিয়ার্স
প্রিটোরিয়ার এক সরকারি স্কুলে পড়াশোনা করেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। শুধু খেলাধুলা না, পড়াশোনায়ও ভালো ছিলেন ডি ভিলিয়ার্স। তিনি বিজ্ঞান প্রজেক্টের জন্য জাতীয় পদক পেয়েছিলেন। এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে সাত ম্যাচে ৪৮২ রান করেন তিনি। এক দিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৬ বলে অর্ধশত, ৩১ বলে শতক, ৬৪ বলে দেড় শ রানের মালিক তিনি। তিনি ১৮৭ এক দিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে ২০ শতকসহ ৭ হাজার ৯৪১ রান করেছেন।
কুমার সাঙ্গাকারা
কুমার সাঙ্গাকারা ক্রিকেট ব্যাটে যেমন, পড়াশোনায়ও তেমন সেরা। তিনি পড়াশোনা করেছেন শ্রীলঙ্কার ট্রিনিটি কলেজে। এই কলেজ থেকে সর্বোচ্চ সম্মাননা ‘রাইড’ স্বর্ণপদক পেয়েছিলেন তিনি। সাঙ্গাকারার বাবা ছিলেন আইনজীবী। বাবার পথেই যেতে চেয়েছিলেন তিনি। কলম্বো বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদে ভর্তি হলেও শেষ পর্যন্ত পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারেননি। এবারের ক্রিকেট বিশ্বকাপে সাত ম্যাচে ৫৪১ রান করেন তিনি। পর পর চার ম্যাচে সেঞ্চুরি করার অসাধারণ রেকর্ড করেন সাঙ্গাকারা।
মার্টিন গাপটিল২০১৫ বিশ্বকাপ ক্রিকেটের আলোচিত ব্যাটসম্যান নিউজিল্যান্ডের মার্টিন গাপটিল। ফাইনালের আগে আট ম্যাচে তাঁর সংগ্রহ ৫৩২ রান। নিউজিল্যান্ডের অ্যাভোনডেল কলেজে পড়াশোনা করেন তিনি। মাত্র ১৩ বছর বয়সে এক দুর্ঘটনায় পায়ের তিন আঙুল হারাতে হয় তাঁর। স্কুলের ক্রিকেট দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন তিনি। গাপটিল শেষবর্ষে ক্লাসের ‘প্রিফেক্ট’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।গ্রন্থনা: জাহিদ হোসাইন খান
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন