বাংলা ভাষায় প্রোগ্রামিং শিক্ষা

LATEST :
সাইটটির উন্নয়ন চলছে এবং শীঘ্রই উন্নয়ন করা হবে

শনিবার, ২৯ আগস্ট, ২০১৫

চাকরিপ্রার্থী নই, চাকরিদাতা

২৮ মে ছিল সামাজিক ব্যবসা দিবস। দিবসটির মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘আমরা চাকরিপ্রার্থী নই, আমরা চাকরিদাতা—বেকারদের উদ্যোক্তায় রূপান্তর’। এ উপলক্ষে ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ইউনূস সেন্টার আয়োজিত অনুষ্ঠানে ৩০টি দেশের আড়াই শ অতিথি এসেছিলেন। অনুষ্ঠানে ‘আমরা চাকরিপ্রার্থী নই, চাকরিদাতা’ শীর্ষক আলোচনায় ছয়জন উদ্যোক্তা নিজেদের সামাজিক ব্যবসার মডেল উপস্থাপন করেন। তাঁরা হলেন লাভলী বেগম, মাফিয়া পারভীন, নাজনীন আক্তার, রেজাউল করিম, জান্নাতুল আফরিন ও ইব্রাহিম হোসেন। ‘গ্রামীণ কল্যাণ’-এর নবীন উদ্যোক্তা বিনিয়োগ কর্মসূচির আওতায় তাঁরা ঋণ নিয়ে কীভাবে ব্যবসা পরিচালনা করছেন, সেই অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। এঁদের মধ্যে স্বপ্ন নিয়েকে চারজন জানান তাঁদের ব্যবসায়িক অভিজ্ঞতা।

প্রযুক্তির পথিক
 ২০০০ সালে এসএসসি পাস করার পর পরিবারের অসচ্ছলতার কারণে থেমে যায় পড়াশোনা। টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ শুরু করেন একটি কম্পিউটার মেরামত প্রতিষ্ঠানে। যদিও ইব্রাহিম হোসেনের তখন প্রাতিষ্ঠানিক কোনো ডিগ্রি ছিল না। তিনি জানান, ‘আমি কাজ করতে গিয়েই কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেছি। ব্যবসা সম্পর্কে শিখেছি।’
এরপর লিংক কম্পিউটার নামে নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান খুলে বসেন ইব্রাহিম। তিনি কম্পিউটারের ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ বিক্রিসহ সার্ভিসিং করেন নিজের প্রতিষ্ঠান থেকে।
বর্তমানে তিনজন স্থায়ী ও কয়েকজন অস্থায়ী কর্মী রয়েছে তাঁর প্রতিষ্ঠানে। ইব্রাহিম স্বপ্ন দেখেন নিজের ব্যবসার পরিসর বাড়িয়ে দেশের বাইরে থেকে সরাসরি যন্ত্রাংশ আমদানি করার।


বিনা পয়সায় ব্যবসা শুরু
 লাভলী বেগম তখন কাজ করতেন স্থানীয় এক বুটিকসের দোকানে। কাজ করতে গিয়ে বুঝলেন তাঁর প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। কিন্তু প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজন পাঁচ হাজার টাকা। যে অর্থের সংস্থান করা লাভলী বেগমের জন্য ছিল অকল্পনীয়। প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে আগ্রহের কথা বললে তাঁকে কাজের বিনিময়ে প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেয়। ২০০৪ সালে নিজেই গড়ে তোলেন একটি বুটিকস হাউস। এলাকার গণ্ডি পেরিয়ে বুটিকস পণ্য সরবরাহ শুরু করেন ঢাকায়। এখন প্রতিনিয়ত চাহিদা বাড়ছে। পরবর্তী সময়ে ঋণ নেন। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে পুঁজি। এরপর গড়ে তোলেন বিউটি পারলার। সব মিলে লাভলী বেগমের অধীনে এখন কাজ করেন ১২ জন নারীকর্মী। তিনি স্বপ্ন দেখেন, নারীদের স্বাবলম্বী করার, মাথা উঁচু করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার।


চাকরি ছেড়ে উদ্যোক্তা
 ২০১২ সালে সরকারি আনন্দ মোহন কলেজ থেকে স্নাতক শেষ করে রেজাউল করিম যোগ দিয়েছিলেন একটি গার্মেন্টস প্রতিষ্ঠানে। কিন্তু চাকরিতে মন টেকেনি। চাকরি ছেড়ে তখন তিনি গ্রামে। নিজেই স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু আত্মীয়স্বজনেরা আবার চাকরিতে যোগ দিতে বলেন। চাকরির প্রস্তাবও পেয়ে যান কয়েকটি প্রতিষ্ঠান থেকে। কিন্তু তিনি যোগ দেননি কোথাও। এর মধ্যেই গ্রামীণ ব্যাংকের স্থানীয় এক কর্মীর কাছে গ্রামীণ কল্যাণের বিনিয়োগ প্রকল্প সম্পর্কে জানতে পারেন। একদিন একটি প্রকল্প নিয়ে হাজির হন ঢাকার ইউনূস সেন্টারে। অনুমোদন পায় তাঁর প্রকল্প। ২০১৪ সালে শুরু করে এরই মধ্যে তাঁর প্রকল্পে রয়েছে চারটি গাভি। নিজের ব্যবসার মানোন্নয়নসহ এলাকায় কয়েকটি ডেইরি ফার্ম করার চিন্তা তাঁর। পাশাপাশি একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও গড়ে তুলতে চান তিনি।


প্রাথমিক পুঁজি মাত্র ১০ হাজার টাকা
 মাত্র ১০ হাজার টাকা পুঁজি নিয়ে মাফিয়া পারভীন শুরু করেন ছোঁয়া বুটিকস।
বুটিকসের কাজটি তাঁর ছোটবেলার শখ। নিজের ও পরিবারের প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো তিনি নিজেই বানাতেন। আবার প্রতিবেশী বা পরিচিত অনেকে আগ্রহ নিয়ে তাঁর কাছ থেকে বুটিকের বিভিন্ন সামগ্রী তৈরি করে নিতেন। মাফিয়া পারভীন একসময় দেখলেন, কাজটি তিনি বাণিজ্যিকভাবে শুরু করতে পারেন। সেটা ২০০০ সালের কথা। ধীরে ধীরে আয়তন বাড়তে থাকে প্রতিষ্ঠানের। পরবর্তী সময়ে ‘গ্রামীণ কল্যাণ’ থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসায় গতি আনেন। এখন তাঁর প্রতিষ্ঠানের কর্মীসংখ্যা ১৩। আর মূলধন বেড়ে হয়েছে প্রায় চার লাখ টাকা। পারভীন ভবিষ্যতে তাঁর পণ্য দেশের বাইরেও রপ্তানি করতে চান।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

স্বত্বাধিকারী © ২০১৫ প্রোগ্রামিং এর মহাজগৎ সব অধিকার সংরক্ষিত
^