বাংলা ভাষায় প্রোগ্রামিং শিক্ষা

LATEST :
সাইটটির উন্নয়ন চলছে এবং শীঘ্রই উন্নয়ন করা হবে

সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৫

নানা রঙের স্বপ্নগুলি

‘আমার স্বপ্ন’ পাঠক সংখ্যার জন্য অসংখ্য শিক্ষার্থী সারা দেশ থেকে লেখা পাঠিয়েছে। তার মধ্য থেকে নির্বাচিত কিছু লেখা ছাপা হলো এই বিশেষ সংখ্যায়।



 চাই সুশাসনের বাংলাদেশ
আমি এক উন্নত বাংলাদেশে বসবাসের স্বপ্ন দেখি। এমন দেশের স্বপ্ন দেখি, যেখানে সরকারি দপ্তরে নাগরিকেরা যথাযথ সেবা পাবেন, সুশাসনের ছোঁয়া থাকবে সর্বত্র। এই কর্মযজ্ঞে অবদান রাখার জন্য আমি বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তা হতে চাই। প্রশাসনে যুক্ত হতে চাই। সরকারি বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সমন্বয়, প্রকল্প বাস্তবায়ন, ভূমি ব্যবস্থাপনা, নাগরিক সেবায় সরকারের আরও দক্ষ জনবল দরকার। সাধারণ শিক্ষার্থীরা করপোরেট চাকরির হাতছানির জন্য প্রশাসনে যুক্ত হতে চায় না। আমি প্রকৌশল পড়া শেষে প্রশাসনে যুক্ত হয়ে গতিশীল ও সুশাসন প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
সাকিব মুকতাসিদ
ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়

সবার ওপর বাংলাদেশছোটবেলা থেকে হাজারো স্বপ্ন আমার। যতই বড় হচ্ছি, স্বপ্নের সংখ্যা ততই কমছে। স্কুলে থাকতে মন খারাপ হলে বিমান চালিয়ে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখতাম। এখন স্বপ্ন কম দেখি, কিন্তু যা ঠিক করেছি তা-ই বাস্তবায়নের চেষ্টা করে যাচ্ছি। সাধারণ মানুষের জন্য কিছু একটা করার স্বপ্ন সব সময় আছে, তার ওপর আমার দেশ বাংলাদেশ। এখানে বললেই সব হয় না, আবার না বললেও সব হয়। দেশের উন্নয়নে আত্মনিয়োগ করতে চাই। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার পড়ার বিষয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত। আমি স্নাতক শেষ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা নিয়ে উচ্চতর শিক্ষার জন্য ইউরোপ বা আমেরিকায় পড়তে যেতে চাই। নিজেকে আত্মপ্রত্যয়ী করে ফিরে আসব দেশে। স্বপ্ন দেখি, বদলে দেব বাংলাদেশের দুর্যোগ মোকাবিলার ভবিষ্যৎ।
নিশাত বিনতে রায়হান
শিক্ষার্থী, ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারাবিলিটি স্টাডিজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

গ্রামের মানুষের উন্নয়নে কাজ করতে চাইআমি দিনাজপুরের এক ছোট উপজেলা শহরের মেয়ে। গ্রামের মানুষ কাজ করে, ফসল ফলায়, অথচ তারাই সবচেয়ে বৈষম্যের শিকার। গ্রামের অনগ্রসর মানুষের উন্নয়ন ছাড়া দেশ এগোতে পারে না। গ্রামের মানুষ সঠিক তথ্যের অভাবে বঞ্চনার শিকার হয়। আমি তাদের কাছে সঠিক তথ্য পৌঁছে দেওয়ার জন্য তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করতে চাই। এ জন্য আমি স্বপ্ন দেখি এমন একটা সংবাদমাধ্যম তৈরি করার, যেখানে মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট প্রযুক্তি ব্যবহার করেই গ্রাহক সব তথ্য পাবে।
ইশরাত জাহান
জেসিএমএস বিভাগ, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ

ঈদের ছুটিতে যা করবখুব ছোট্ট কিছু উদ্যোগ নিয়ে একটা বড় স্বপ্নের নৌকা ভাসিয়েছি আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে। একটি ছোট সংগঠন খুলে এগিয়ে যাচ্ছি, উদ্দেশ্য ভালো কিছু করা। এই ঈদে জমানো টাকা দিয়ে কিছু জামা কিনেছি, যা কয়েকজন অসচ্ছল শিক্ষার্থীকে দেব। গ্রামের দুটো স্কুলে ঈদের ছুটির দিনগুলোতে একদল শিক্ষার্থীকে পড়াব। এগুলো আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতার ভেতর থেকে বেরিয়ে আসা ছোট্ট উদ্যোগ। অনেকে দমে গেলেও আমরা শেষপর্যন্ত মাঠে নামি। আমাদের ছোট উদ্যোগ থেকে যদি কারও মুখে হাসি ফোটে, তাহলে মন্দ কী?
সাদ্দাম হোসেন
শিক্ষার্থী, আইবিএ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

ফুলের সঙ্গে বসবাসআমার স্বপ্ন, নিজের একটা ফুলের দোকান হবে, বসবাস করব সেই ফুলের রঙিন রাজ্যে। সব ধরনের ফুলে ভরে থাকবে আমার সেই রাজ্য। আমাদের দেশে ফুলের ব্যবহার দিন দিন বেড়েই চলেছে। বিভিন্ন উৎসব-পার্বণে সবাই আমার হাতে তৈরি ফুলের রাজ্য থেকে ফুল নেবে, ঘর সাজাবে কিংবা প্রিয়জনকে উপহার দেবে। তবে হ্যাঁ, শুধু ফুল নয়, ইচ্ছা আছে আরও গভীরে কাজ করার। চারা থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রজাতির ভিনদেশি ফুলগুলো কী করে বাংলাদেশের আবহাওয়া-উপযোগী করে সহজাতভাবে তৈরি করা যায়, সেটা নিয়ে গবেষণা করার ইচ্ছা আছে ভবিষ্যতে। সঙ্গে ফ্লাওয়ার আর প্লান্ট ম্যানেজমেন্টের জন্য হর্টিকালচার বিষয়ে উচ্চতর ডিগ্রি নিতে চাই।
সেরিনা জেরিন
শিক্ষার্থী, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ময়মনসিংহ।

দেশি পণ্যের বিকাশের স্বপ্ন
বিদেশি পণ্যকে এখনো বেশির ভাগ মানুষ সেরা পণ্য হিসেবে গণ্য করে। কিন্তু বাজারে লক্ষ করলেই দেখবেন, আমাদের দেশের পণ্য বিদেশি পণ্যের চেয়ে ভালো। এখনো কিছু মানুষের কাছে দেশি পণ্য মানেই খারাপ আর বিদেশি পণ্য মানেই যেন অমৃত! আমি স্বপ্ন দেখি অদূর ভবিষ্যতে দেশি পণ্য ব্যবহার নিয়ে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার। মানুষকে দেশি পণ্য ব্যবহারের জন্য উৎসাহিত করতে চাই। দেশি পণ্য ব্যবহারের মাধ্যমেই বাংলাদেশের অর্থনীতির ভিত মজবুত হবে। সেদিন আর বেশি দূরে নয়, যেদিন বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হবে।
রাসেল হোসেন
ফিন্যান্স বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

 আমার গ্রামে একটা লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করবমানুষকে শিক্ষা দেওয়া হয় কলমের মাধ্যমে। কলমের আশ্রয় বই। বইয়ের আশ্রয় লাইব্রেরি। বই পড়া, লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা যে ভালো কাজ তা যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করা নিষ্প্রয়োজন। জাতির মানসিক স্বাস্থ্য উন্নয়নে লাইব্রেরির বিকল্প নেই। এখন লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা আর নিয়মিত যাওয়ার রেওয়াজ কমে গেছে।
সফলদের জীবনী থেকে জানা যায়, প্রত্যেক সফল ব্যক্তি সময়ের সদ্ব্যবহার ও অগণিত বই পড়তেন। সাহিত্য মানুষের অন্তরকে শুদ্ধ করে তোলে। আত্মোপলব্ধিকে শাণিত করে। লাইব্রেরি থেকে ছড়িয়ে দেওয়া যায় জ্ঞান ও প্রগতির আলো। তাই আমার ইচ্ছা, আমার গ্রামের এলাকায় একটা লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করব।
জাভেদ জাফরি
আইন বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

ভালো মানুষ হওয়ার স্বপ্ন দেখিসারা দিন কত যে স্বপ্ন দেখি তার হিসাব নেই। স্বপ্ন দেখি মায়ের মতো লেখক হব, স্বপ্ন দেখি বাবার মতো গান গাইব, কিংবা ছোট মামার মতো পাইলট হয়ে নীল আকাশে পাখির মতো উড়ে বেড়াব। মা চান আমি হব কবি আর বাবা চান আমি হব আইনজীবী। নানীর ইচ্ছে যেন তাঁর মতো ডাক্তার হই। শত স্বপ্নের ভিড়ে আমার একমাত্র ইচ্ছে সত্যিকারের ভালো মানুষ হওয়া। মানুষের সেবা করতে চাই, অন্যায়ের
প্রতিবাদ করতে চাই। এ জন্য অনেকে আমাকে পাগল আর বোকা মেয়ে ভাবে। কিন্তু তারপরেও আমি সাধারণ মানুষের সেবা করতে চাই, পরিবর্তন আনতে চাই তাদের জীবনে।
নাফিসা তাসনীম ইশরাক
শিক্ষার্থী, বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, টাঙ্গাইল।

আমি সিনেমাপাগলছোটবেলা থেকেই আমি খুব সিনেমাপাগল। টেলিভিশনে কোনো সিনেমা আমি বাদ দিতাম না। এই সিনেমার সঙ্গে আমার আর যে অনুষ্ঠান বাদ যেত না সেটি হলো সশস্ত্র বাহিনীর বিভিন্ন কার্যক্রম নিয়ে প্রচারিত ‘অনির্বাণ’। সেখানে সৈনিকদের নিয়মানুবর্তিতা আর শৃঙ্ক্ষলা দেখে আমি মুগ্ধ হতাম। তখন থেকেই আমি স্বপ্ন দেখি, আমি অভিনেতা হব। আর সবচেয়ে বড় স্বপ্ন হলো, একজন সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তার চরিত্রে অভিনয় করব।
তৌকির আলম মিঞা
দ্বাদশ শ্রেণি, বিজ্ঞান বিভাগ
সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ, জামালপুর।

ডাক্তার যখন রাঁধুনিভালো লাগে যখন আমার রান্না করা চিকেন তন্দুরি বা স্যুপ খেয়ে বন্ধুবান্ধবসহ পরিবারের সদস্যরা প্রশংসা করে। আমার স্বপ্ন, নিজের মনমতো উন্নতমানের স্বাস্থ্যসম্মত একটা রেস্টুরেন্ট দেওয়ার। যখন রাতে ঘুম আসে না, আমি তখন আমার স্বপ্নের সেই রেস্টুরেন্টের ইন্টেরিয়র নিয়ে ভাবতে শুরু করি, চিন্তা করি সামান্য চামচ থেকে শুরু করে ওয়েটারদের ড্রেস পর্যন্ত কী রকম হবে। আমি জানি, স্বপ্ন পূরণের পথে বাধা আসবে; মা বলবেন, ‘আমার ডাক্তার ছেলে কিনা শেষ পর্যন্ত রাঁধুনি।’ তাই বলে থেমে যাওয়ার পাত্র আমি নই। সাহস করে এগোতেই হবে। থেমে যাওয়া মানে হেরে যাওয়া। তাই শেফ আমি হবই, মানুষকে মুগ্ধ করব নিজের কুকিং ট্যালেন্ট দিয়ে।
রাকিব আলম
শিক্ষার্থী, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ।

চারপাশে স্বপ্নেরা খেলা করেস্বপ্ন এখন আমার চারপাশে খেলা করে। হয়তো আর কিছুদিন, আমি ছুঁয়ে যাব ছোটবেলার সেই স্বপ্নকে। ক্লাসের ব্যবহারিক কাজগুলো করতে গিয়ে এমনই মনে হয়। যখন কোনো ব্যাংকের হিসাব-নিকাশ নিয়ে কাজ করি, তখন মনেই হয় না আমি কেবলই একজন শিক্ষার্থী হিসেবে এসব করছি। হ্যাঁ, আমি ব্যাংকার হতে চাই। আমি ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগে পড়ছি, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। আর ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগে পড়ার ইচ্ছা সেই মাধ্যমিকে যখন ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় ভর্তি হয়েছিলাম, তখন থেকেই। আর ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন? ছোটবেলায় দেখতাম আমার পরিবারের অনেকে ছিলেন এই পেশার সঙ্গে যুক্ত, তখন থেকেই আমি খুবই উৎসাহী হই ব্যাংকিং পেশা বিষয়ে। ব্যাংকিং খাত সঠিকভাবে চললে বাংলাদেশ সঠিক পথে চলবে এবং তা হবে দেশের জন্য বড় ধরনের সুখবর।
সানজিদা নওরিন
তৃতীয় বর্ষ, বিবিএ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।

খেলার ছলে বিজ্ঞান

বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষার্থী অনেক মেধাবী। কিন্তু অনেক শিক্ষার্থীর মেধার অপমৃত্যু ঘটে যখন তারা বিজ্ঞানের মতো মজার বিষয়গুলো না বুঝে মুখস্থ করে। এ জন্য আমরা বাস্তবজীবনে বিজ্ঞানকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারছি না। তাই আমি স্বপ্ন দেখি, বড় হয়ে একজন গবেষক হব এবং ওসব শিশু-কিশোরের জন্য কাজ কাজ করব, যারা বিজ্ঞান মুখস্থ করতে গিয়ে রীতিমতো হতাশ হয়ে পড়ে। আমি তাদের জন্য বিজ্ঞান শিক্ষাব্যবস্থার এক আনন্দময় পরিবেশ সৃষ্টি করব, যার মাধ্যমে প্রত্যেকেই খেলার ছলে, হাসির ছলে বিজ্ঞানের বিষয়গুলো আত্মস্থ করতে পারবে। তারা চিন্তা করতে শিখবে এবং নিজের মতো করে উদ্ভাবন করতে শিখবে।
মৌরি তানিয়া
আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ান পাবলিক স্কুল ও কলেজ, বগুড়া।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

স্বত্বাধিকারী © ২০১৫ প্রোগ্রামিং এর মহাজগৎ সব অধিকার সংরক্ষিত
^