বাংলা ভাষায় প্রোগ্রামিং শিক্ষা

LATEST :
সাইটটির উন্নয়ন চলছে এবং শীঘ্রই উন্নয়ন করা হবে

সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০১৫

নানা রঙে নিশাত

রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে স্বপ্নের পঙ্খিরাজকে ছেড়ে দেন নিশাত রায়হান। তারপর দিনমান ছুটে চলেন সেই পঙ্খিরাজের পেছন পেছন। মুখে লাগাম না পরানো পর্যন্ত তাঁর আর অবসর নেই। নিশাত এমনই। অনেকটা নেশাগ্রস্তের মতো নিরন্তর স্বপ্নের পেছনে ছুটে চলেন। স্বপ্নকে নাগালবদ্ধ না করা অবধি হাল ছড়েন না। নিশাত পড়ছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ভালনারিবিলিটি স্টাডিজের দ্বিতীয় বর্ষে। এর মধ্যেই স্বপ্নের প্রথম ধাপ ছুঁয়ে ফেলেছেন। প্রথম বর্ষের চূড়ান্ত পরীক্ষায় জিপিএ ৩.৯৬ পেয়ে হয়েছেন প্রথম শ্রেণিতে প্রথম।
সফলতা ছোঁয়ার ব্যাপারে নিশাতের এই নাছোড়বান্দা স্বভাব সেই ছোটবেলা থেকেই। নিশাত পরিবার ও বন্ধুদের কাছে পরিিচত ‘অমনি’ নামে। রাজধানীর হলিক্রস স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি ও এইচএসসি দুটোতেই পেয়েছেন সব বিষয়ে জিপিএ ৫। লেখাপড়ার পাশাপাশি আরও নানা বিষয়ে তাঁর রয়েছে অসাধারণ অর্জন। সেই স্কুলে পড়ার সময় ২০০৯ সালে আন্তস্কুল ভলিবল প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অর্জন করেছেন চ্যাম্পিয়ন শিরোপা। এরপর ২০১১ সালে কলেজের সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়ে অভিনয় বিভাগে পেয়েছেন পুরস্কার। স্কুলজীবনে পুরস্কার আর অর্জন ছিল তাঁর নিত্যসঙ্গী। বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের বইপড়া কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে পেয়েছেন পুরস্কার। এ ছাড়া ছিলেন স্কুলের সাময়িকী মন্দিরার সম্পাদনা পরিষদের সদস্য ছিলেন।
স্কুল-কলেজের যেকোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নিশাত ছিলেন অবধারিতভাবে উপস্থাপক। সেই চর্চা এখনো অব্যাহত রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ বিভাগের যেকোনো অনুষ্ঠান নিশাত ছাড়া কল্পনাই করা যায় না। আয়োজনে তিনি আছেন, উপস্থাপনায় তিনি আছেন। অসম্ভব বাকপটু নিশাত হাসতে হাসতে বলেন, ‘কথা বলতে ভালো লাগে আমার। তাই উপস্থাপনা অসম্ভব পছন্দ করি।’
আর কী পছন্দ করেন তিনি? লিখতে। লেখেন নানা ধরনের ফিচার ও নিবন্ধ। এই তো সম্প্রতি জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলা দিবসের রচনা প্রতিযোগিতায় পুরস্কার জিতেছেন। শুধু তা-ই নয়, বাংলাদেশের বস্তিবাসীদের ওপর দুর্যোগের প্রভাব নিয়ে তাঁর লেখা নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে এশিয়ান ডিজাস্টার প্রিপেয়াডনেস সেন্টার (এডিপিসি) নামের আন্তর্জাতিক জার্নালে।
ভ্রমণের প্রতি রয়েছে নিশাতের প্রবল আগ্রহ। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ‘টর্চলাইট র্যালি ফর পিস’–এ অংশ নিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আট সদস্যের অন্যতম প্রতিনিধি হিসেবে গিয়েছিলেন কলকাতায়। নিশাত বলেন,‘এটি আমার জীবনের অন্যতম সেরা স্মৃতি। এ আয়োজনের উদ্দেশ্য ছিল দুই বাংলার মধ্যকার বন্ধন দৃঢ় করা।’
বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সঙ্গেও তিনি সক্রিয়ভাবে জড়িত। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে: ভিএসও বাংলাদেশ, অ্যাকটিভ সিটিজেন বাংলাদেশ, উই ফাউন্ডেশন, ইয়ুথ ক্লাব অব বাংলাদেশ ইত্যাদি।
এত বিস্তৃত কাজের পরিধি যাঁর, সেই নিশাতের জীবনের লক্ষ্য তবে কী? চোখ ঝিকমিক করে ওঠে তাঁর। সেই চোখের পলক না ফেলেই বলেন, ‘দেশের বাইরে গিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ওপর উচ্চতর ডিগ্রি নিতে চাই। এবং অবশ্যই পড়া শেষ করে দেশে ফিরে এসে দেশের জন্য কাজ করতে চাই।’

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

স্বত্বাধিকারী © ২০১৫ প্রোগ্রামিং এর মহাজগৎ সব অধিকার সংরক্ষিত
^