বাংলা ভাষায় প্রোগ্রামিং শিক্ষা

LATEST :
সাইটটির উন্নয়ন চলছে এবং শীঘ্রই উন্নয়ন করা হবে

মঙ্গলবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৫

স্বপ্ন ছুঁতে বিদেশে

‘রেখেছ বাঙালি করে, মানুষ করোনি’ বলে অক্ষেপ কারার দিন নেই আর। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা এখন অনেকেই পড়ছেন বিশ্বের সেরা বিদ্যাপীঠগুলোতে। যেমন হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছেন তারিক আদনান, স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে হক মোহাম্মাদ ইশফাক এবং ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে (এমআইটি) নাজিয়া চৌধুরী, তামান্না ইসলাম ও বৃষ্টি শিকদার। পড়ছেন আরো অনেকে। সেমিস্টার বিরতি আর বড়দিনের ছুটিতে দেশে এসেছিলেন এই পাঁচ মেধাবী।
উচ্চশিক্ষার জন্য তাঁরা বাস করেন ঘর থেকে ১৩ হাজার কিলোমিটার দূরে। ভিনদেশে পড়াশোনা, পরিবার থেকে দূরে নতুন পরিবেশে নিজেকে মানিয়ে স্বপ্নকে ছুঁতে অবিরাম এগিয়ে চলতে কেমন লাগে তাঁদের? সেসব নিয়েই কথা হলো এক পশলা।
হার্ভার্ড-পড়ুয়া তারিকের ব্যাচেলর পড়াশোনা শেষ হবে এ বছরের মে মাসে। ৩০ দিনের ছুটিতে দেশে এসে শিশু-কিশোরদের প্রোগ্রামিং দক্ষতা বাড়ানোর জন্য বেশ কটি ওয়ার্কশপ পরিচালনা করেছেন তিনি। হার্ভার্ডে ফলিত গণিত আর কম্পিউটার বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা তাঁর। তিনি বলেন, ব্যাচেলর শেষে বছর খানেক বাস্তবজ্ঞান অর্জনের জন্য মার্কিন ই-কমার্স ওয়েবসাইট ইবের নিউইয়র্ক অফিসে গবেষক হিসেবে যোগ দিচ্ছি।’ গোল্ডম্যান শ্যাকস আর ইবেতে এর আগে ইন্টার্ন হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা আছে তাঁর। তারিক বলেন, ‘কয়েক বছর চাকরি করার পর মার্স্টাস আর পিএইচডি করে দেশে ফিরে আসব। দেশে অনেক প্রকল্প আর কর্মসূচির সঙ্গে সম্পৃক্ত আমি। এই প্রকল্পগুলোকে বড় আকারে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব তখন।’
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইশফাক বলেন, ‘এখন পড়াশোনা করছি পরিসংখ্যান বিষয়ে। স্নাতক শেষ হবে এই জুনে। আর একজন অধ্যাপকের সঙ্গে গবেষণায় যুক্ত আছি কম্পিউট্যাশনাল মলিকুলার বায়োলজি/ম্যাথমেটিক্যাল বায়োলজির ওপর।’
ইশফাক জানান, কয়েক মাসের মধ্যে স্নাতক ডিগ্রির পড়াশোনা শেষ হবে তাঁর। তিনি পড়ছেন ম্যাথমেটিক্যাল অ্যান্ড কম্পিউট্যাশনাল সায়েন্সে। এই ডিসেম্বরে ১৮ দিনের জন্য বাংলাদেশে আসার সুযোগ পেয়ে বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি আর গণিত উৎসবে সময় দিয়েছেন তিনি। পড়ালেখা শেষে কী করার পরিকল্পনা জিজ্ঞেস করতেই এই মেধাবীর উত্তর, ‘আপাতত পরিসংখ্যানে মাস্টার্স করতে চাই। তারপর একই বিষয়ে পিএইচডি শেষে দেশে ফিরব। তারপর দেশের কোনো গবেষণা প্রতিষ্ঠানে গবেষক হিসেবে যোগ দিতে চাই।’
গবেষক হতে চান এমআইটি থেকে ব্যাচেলর করা নাজিয়াও। তিনি গবেষণা করতে চান ক্যানসার নিয়ে। কারণ, তিনি এমআইটি থেকে বায়োলজিতে ব্যাচেলর ডিগ্রি নিয়ে দেশে ফিরেছেন। এবার ছুটিতে দেশে এলেও এর আগের ছুটিগুলোতে বিভিন্ন জায়গায় ইন্টার্নশিপ করে নিজেকে ঝালিয়ে নিয়েছেন। নাজিয়া বলেন, ‘এমআইটিতে পড়ার সময় ভারতের হোপ ফাউন্ডেশন ও হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথে ইন্টার্নশিপ করার মধ্য দিয়ে ব্যবহারিক জ্ঞান লাভের চেষ্টা করেছি। ভবিষ্যতে এমডি করতে চাই। এরপর দেশে ফিরে আইসিডিডিআরবি বা এ ধরনের গবেষণা প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে চাই।’ জনস্বাস্থ্য নিয়েও কাজ করার ইচ্ছে আছে নাজিয়ার।
তামান্না ইসলাম ব্যাচেলর পর্যায়ের পড়াশোনা শেষ হবে ২০১৬ সালের মে মাসে। মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করছেন তিনি। তবে ভবিষ্যতে পরিবেশ বিজ্ঞান ও কম্পিউটার বিজ্ঞানের ওপরেও কিছু কোর্স করার ইচ্ছে আছে তাঁর। তামান্না বলেন, ‘পরিবেশ উপযোগী, টেকসই নকশা আর গবেষণা বিষয়ে দক্ষ হতে চাই।’
সেমিস্টার শেষের ছুটিতে কিছুদিনের জন্য দেশে এসেছেন তামান্না। তাঁর ভাষ্যে, ‘দেশের শীত উপভোগ করতে এসেছি। তবে পাশাপাশি দেশে আমার এক প্রজেক্টের (আবর্জনা ব্যবস্থাপনা) জন্য কিছু জরিপের কাজও করেছি।’
আগের ছুটিগুলোতে ইন্টার্নশিপ করার পাশাপাশি সেমিস্টার চলাকালীন বিভিন্ন অধ্যাপকের সঙ্গে গবেষণায় জড়িত ছিলেন তিনি। দুই বছর যাবৎ আবর্জনা থেকে ব্যবহার্য পদার্থ রূপান্তর ও কার্যকরী ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কাজ করছেন। গত বছর পানামার কুনা ইয়ালা দ্বীপপুঞ্জে গিয়ে আবর্জনা ব্যবস্থাপনা নিয়ে কাজ করার পরে দেশের দিনাজপুরের আবর্জনা ব্যবস্থাপনা নিয়ে তাঁর প্রজেক্ট ওয়েসটুক্লিনের ওপরে কাজ করছেন তিনি। তামান্না অনার্স শেষ করে ওখানেই মাস্টার্স করতে চান। তিনি বলেন, পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে পরিবেশ উপযোগী টেকসই পদ্ধতি উন্নয়ন নিয়ে কাজ করতে চাই।’
বৃষ্টি শিকদার এমআইটিতে পড়ছেন কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিষয়ে। পড়াশোনা শেষে বাংলাদেশে ফিরে উদ্যোক্তা হতে চান তিনি। আগামী গ্রীষ্মে সার্চ জায়ান্ট গুগলে ইন্টার্নশিপ করবেন বৃষ্টি। বৃষ্টি বলেন, ‘পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে নিজে কোনো প্রতিষ্ঠান দাঁড় করাতে চাই। প্রযুক্তি-উদ্যোক্তা হওয়ার দিকেই আমি সব মনোযোগ ঢেলে দেব।’


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

স্বত্বাধিকারী © ২০১৫ প্রোগ্রামিং এর মহাজগৎ সব অধিকার সংরক্ষিত
^