বাংলা ভাষায় প্রোগ্রামিং শিক্ষা

LATEST :
সাইটটির উন্নয়ন চলছে এবং শীঘ্রই উন্নয়ন করা হবে

রবিবার, ১৬ আগস্ট, ২০১৫

এশিয়ার সম্ভাবনা

‘সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিবেশ, ভিন্ন সংস্কৃতি। বেশ চমকে গেলাম। শুরুতে ঝাল খাবারদাবারে নিজেকে মানিয়ে নিতে কষ্ট হচ্ছিল। এখানে নতুন অনেক কিছু দেখা ও শেখার সুযোগ হয়েছে, যা আমার জীবনের বিশাল অর্জন।’
আফগান তরুণী মাসুমা মাকসুদ তাঁর বিশ্ববিদ্যালয়জীবনের প্রথম দিকের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন এভাবে। চট্টগ্রামের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি।
মাসুমা উচ্চশিক্ষার জন্য নিজ দেশ ছেড়ে পাড়ি দিয়েছেন বাংলাদেশে। তাঁর স্বপ্ন আফগানিস্তানে দীর্ঘস্থায়ী শান্তি ও উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করার।
এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসে মাসুমার বন্ধুত্ব হয় এশিয়ার ১৬টি দেশের ভিন্ন সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যে বেড়ে ওঠা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে।
১৫ জানুয়ারি সকালে এইউডব্লিউ ক্যাম্পাসে যখন কথা হয় মাসুমার সঙ্গে, তখন সেই আড্ডায় শামিল হন ভিয়েতনামের বিক ট্র্যান, বাংলাদেশের রাইয়া কিশোয়ার আশরাফ, শ্রীলঙ্কার কাঞ্চনা আরাচ্চি ও নেপালের আনশু অধিকারী। ক্যাম্পাস-জীবনের খুঁটিনাটি, ব্যক্তিগত অর্জন, পরিবারের কথা ও নিজেদের স্বপ্নের কথা তুলে ধরেন তাঁরা।
স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ভিয়েতনামের বিক ট্র্যান বললেন, ‘আমার জীবনের ১৮০ ডিগ্রি বাঁক পরিবর্তন হয়েছে এইউডব্লিউতে এসে। আমি যেমনটি স্বপ্ন দেখেছিলাম, তার সবটাই পেয়েছি এখানে।’
ভিয়েতনামের দং নাই প্রদেশের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে বাস করেন বিকের পরিবার। বাবা-মা কৃষি কাজ করেন। ছোটখাটো ব্যবসা করেন ভাইয়েরা। কিন্তু সে আয়ে বিদেশে পড়ার খরচ জোগানো কঠিন। বিক বললেন, ‘এখানে পড়ার জন্য এইউডব্লিউ আমাকে যেভাবে আর্থিক সমর্থন জুগিয়েছে, এ জন্য আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
এইউডব্লিউর পড়াশোনা শেষে পাবলিক পলিসি নিয়ে উচ্চতর পড়াশোনার স্বপ্ন দেখেন বিক ট্র্যান। তাঁর যুক্তি হলো, ‘বেঁচে থাকার জন্য কঠোর সংগ্রাম করতে দেখেছি আমার দেশের মানুষজনকে। এ ক্ষেত্রে সব সমস্যার মূলে রয়েছে পাবলিক পলিসি। আমি মনে করি, সমাজ পরিবর্তনের জন্য এসব সমস্যা চিহ্নিত করা জরুরি।’
স্নাতক চতুর্থ বর্ষে পড়ছেন ঢাকার মেয়ে রাইয়া কিশোয়ার আশরাফ। পড়াশোনার পাশাপাশি এইউডব্লিউতে বিতর্ক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে ইতিমধ্যেই বেশ পরিচিতি পেয়েছেন রাইয়া। স্নাতক তৃতীয় বর্ষে পড়ার সময়ে ফরাসি দূতাবাসের বৃত্তি নিয়ে ফ্রান্সের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভ্রমণের সুযোগ পেয়েছেন তিনি। ২০১২ সালে এইউডব্লিউর পক্ষে বিতর্ক প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে নিউজিল্যান্ড যান। এ ছাড়া রাইয়ার ঝোঁক রয়েছে ব্যাডমিন্টন, বাস্কেটবল, নাচের প্রতি। ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং জাতীয় উন্নয়ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকাণ্ডে যুক্ত হতে চান। রাইয়ার ছোট বোনও এইউডব্লিউর শিক্ষার্থী।
ভিজুয়াল ও পারফরম্যান্স আর্টের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছেন শ্রীলঙ্কার কাঞ্চনা আরাচ্চি। পড়ছেন স্নাতক তৃতীয় বর্ষে। ইতিমধ্যেই পরিচিতি পেয়েছেন ফ্রিল্যান্স পেইন্টার হিসেবে। বাংলাদেশ, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ অনেক দেশে তাঁর ৭০টিরও বেশি চিত্রকর্ম বিক্রি হয়েছে।
কাঞ্চনা বলেন, ‘আমি শিল্প ও সাহিত্যকে ভালোবাসি। এ ছাড়া ছবি তোলা, নাচ ও সাহিত্য-শিল্পকলার বইপত্র পড়ি।’
নেপালের মেয়ে আনশু অধিকারী গত বছর ‘বাংলাদেশ ডিসকভারি রাইডে’র হয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত ২০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন সাইকেল চালিয়ে। যথোপযুক্ত শিক্ষা ও সুযোগ-সুবিধা দিয়ে নেপালে নারীর ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে কাজ করার স্বপ্ন দেখেন আনশু।
এইউডব্লিউতে ভর্তি
এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) চলতি শিক্ষাবর্ষে ভর্তি চলছে। আবেদনের শেষ তারিখ: ৩১ জানুয়ারি ২০১৫। ফর্ম ডাউনলোড এবং ‘এইউডব্লিউ– প্রথম আলো ফার্স্ট ফিমেল ইন দ্য ফ্যামিলি স্কলারশিপ অ্যাওয়ার্ড’–এর তথ্য জানতে দেখুন www.auw.edu.bd ওয়েবসাইটে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

স্বত্বাধিকারী © ২০১৫ প্রোগ্রামিং এর মহাজগৎ সব অধিকার সংরক্ষিত
^